নিজের চেহারার সুরক্ষায় আমারা কত কিছুই না করে থাকি। কারণ চেহারাটাই আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য প্রকাশ করে। অনেক সময় ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রূপের যত্নে যেমন রূপচর্চার প্রয়োজন আছে তেমনি আছে খাবারের ভূমিকাও।
চলুন দেখে নেয়া যাক ত্বকের জন্য ক্ষতিকর খাবারগুলো সম্পর্কে–
অতিরিক্ত লবণ: অনেকেরই বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাস আছে। অতিরিক্ত লবণ শরীরের এক ধরণের ক্ষতিকর ফ্লুইড বাড়িয়ে দেয়। এতে অল্প বয়সে ত্বক ঝুলে পরার সম্ভাবনা দেখা দেয়। লবণের কারণে ত্বকের উপরিভাগের মসৃনতা নষ্ট হয়। তাই অতিরিক্ত লবন দিয়ে তৈরি খাবার বিশেষ করে চিপস, সল্টেড ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও টিনজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
ভাজাপোড়া খাবার: ভাজাপোড়া খাবারে থাকা প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের জন্য খুবই খারাপ। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার ত্বকে ব্রণ এর সমস্যার সৃষ্টি করে। ফলে ত্বকের সজীবতা হারিয়ে যায়।
অতিরিক্ত ক্যাফেইন: ক্যাফেইন এক ধরণের উত্তেজক। যদি একের পর এক কফি পান করতে থাকেন তবে তা ভয়ংকর ব্যাপার। অতিরিক্ত ক্যাফেইন যুক্ত খাবার খেলে শরীরের করটিসল নামের এক ধরণের উদ্দীপকের উপস্থিতি বেড়ে যায় যা ত্বককে শুষ্ক ও কালো করে দেয়। তাই কাপের পর কাপ চা, কাফি কিংবা চকলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কোমল পানীয়: সোডা বা অন্যান্য কোমল পানীয় ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এতে থাকে চিনি ও কারবোনেটেড ওয়াটার। চিনি এমনিতেই ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে কারবোনেটড ওয়াটার ত্বকের কোমলতা নষ্ট করে। তাই অল্প বয়সে বুড়িয়ে যেতে না চাইলে সোডা জাতীয় পানীয় পানের অভ্যাস ত্যাগ করুন।
অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পানে ত্বক বুড়িয়ে যায়। অ্যালকোহল শরীরে এন্টি-ডিউরেটিক হরমোনের ক্ষরণ ঘটায় এবং রক্তের উদ্দীপনা বাড়িয়ে দেয়, ফলে পানির তৃষ্ণা বেড়ে যায়। আর পানি শূন্যতার ফলে ত্বক খসখসে হয়ে যায়।
অতিরিক্ত চিনি: চিনিকে অনেকে সাদা বিষ মনে করেন। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে পাকস্থলী তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এতে করে ত্বকের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পরে।
লাল মাংস: অতিরিক্ত লাল মাংস খেলে ত্বকে বিরূপ প্রভাব পড়ে। লাল মাংসে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং ত্বকের সৌন্দর্য কমিয়ে দেয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রক্রিয়াজাত করার সময় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফলে নষ্ট হয় খাদ্যমান। অন্যদিকে প্রক্রিয়াজাত করার সময় ব্যবহার করা রাসায়নিক উপাদান ত্বকের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ফ্রাইড ফুড: ভাজা-পোড়া জাতীয় অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়। তেল প্রধানত ত্বকে একধরনের টক্সিন তৈরি করে, যা ত্বকে নীরব প্রদাহ সৃষ্টি করে। এছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়ার ক্ষতিতো আছেই।
ফাস্টফুড জাতীয় খাবার: ফাস্টফুড আমাদের চেহারার জন্যও অনেক বেশি ক্ষতিকর। ফাস্টফুড আমাদের দেহের পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এতে ত্বকে পানির মাত্রা কমে গিয়ে ত্বক শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে পড়ে। ফলে ত্বক ফাটা এবং ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া অতিরিক্ত মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার মতো নানা উপাদান থাকে এসব খাবারে। তাই ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য এগুলো খুবই ক্ষতিকর।
প্রক্রিয়াজাত মিষ্টি খাবার: চকলেট, ক্যান্ডি ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত খাবারে অনেক চিনি থাকে যা ত্বকের জন্য বড় সমস্যা। অতিরিক্ত চিনির কারণে কোলাজেন নষ্ট হয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে যেতে পারে। একই ভাবে প্রক্রিয়াজাত জুসও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
মুখের স্বাদে আমরা অনেক খাবারই খাই। সুস্বাস্থ্যের জন্য ও ত্বকের পরিচর্যায় খাদ্যাভ্যাসের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। তাই উপরের খাবারগুলি ত্বকের সুরক্ষায় এড়িয়ে চলা উচিত।