একই দিনে দু’টি মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে চলেছেন বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের মানুষ। ২৭ জুলাই রাতে শতাব্দীর দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। আর সে-দিনই মঙ্গলের প্রতিযোগ অর্থাৎ পৃথিবীর কাছে এসে যাবে সে। তার ফলে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত লাল গ্রহকে আকাশে জ্বলজ্বল করতে দেখা যাবে। তবে সে পৃথিবীর সব থেকে কাছে আসবে ৩১ জুলাই। সে-দিন পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব হবে প্রায় পাঁচ কোটি ৭৬ লক্ষ কিলোমিটার। গ্রহণের রাতে চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়লে মঙ্গলকে আরও ভাল ভাবে নজরে পড়বে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ২৭ জুলাই পূর্ণিমা। সে-দিন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ এক সরলরেখায় চলে আসায় পৃথিবীর ছায়ায় পুরোপুরি প্রবেশ করবে চাঁদ। অর্থাৎ পূর্ণগ্রাস হবে তার। ২৭ জুলাই রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে চাঁদের আংশিক গ্রহণ শুরু হবে। পূর্ণগ্রাস শুরু রাত ১টায়। চলবে রাত ২টো ৪৩ মিনিট পর্যন্ত। পুরোপুরি গ্রহণ শেষ হবে ২৮ জুলাই ভোর ৩টা ৪৯ মিনিটে।
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ চলবে এক ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ধরে। এটি শতাব্দীর দীর্ঘতম। এর আগে, ২০০০ সালের ১৬ জুলাই এক ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ধরে পূর্ণগ্রাস চলেছিল। ২০১১ সালের ১৫ জুন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হয়েছিল এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট ধরে। চাঁদ পৃথিবীর চার পাশে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পাক খেতে খেতে এক বার কাছে আসে এবং এক বার দূরে যায় । ২৭ জুলাই চাঁদ অপভূ অবস্থানে থাকার ফলে কক্ষপথে তার গতিবেগ কম হবে এবং পৃথিবীর ছায়ার মাঝখান দিয়ে সে দীর্ঘতম পথ অতিক্রম করবে। এর ফলে পূর্ণগ্রাসের সময় বেশি হবে।
মঙ্গল গড়ে ২৬ মাস অন্তর পৃথিবীর কাছে আসে এবং প্রতিযোগ হয়। অর্থাৎ সূর্য ও মঙ্গলের মাঝখানে আসে পৃথিবী এবং এক সরলরেখায় থাকে। এ বার এই ঘটনাকে ‘সুবর্ণ প্রতিযোগ’ বলছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানান, মঙ্গল তার কক্ষপথে সূর্যের কাছাকাছি থাকার সময়ে প্রতিযোগ হলে তাকে সুবর্ণ প্রতিযোগ বলা হয়। এর ফলে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ জুড়ে রাতের আকাশে ঝলমলে লাল গ্রহের দেখা মিলবে। ২০০৩ সালের ২৮ অগস্ট পৃথিবী ও মঙ্গলের দূরত্ব কমে হয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি ৫৮ লক্ষ কিলোমিটার। গত ৬০ হাজার বছরের হিসেবে সেটাই ছিল দুই গ্রহের সব থেকে কাছাকাছি আসা।