চলতি আমন মৌসুম থেকেই ‘কৃষকের অ্যাপস’ নামে একটি অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনবে সরকার। সকল অনিয়ম ও দুর্নীতিরোধে অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে এই ধান কেনা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠরা। পরীক্ষামূলকভাবে দেশের ১৬টি উপজেলায় এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারের ধান সংগ্রহে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন কৃষকরা। যাদের জন্য এই সংগ্রহ অভিযান সেই কৃষকরাই এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। এই সমস্যা দূর করতেই অনলাইনে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সরকারি গুদামে কৃষকের ধান সরবরাহে দালাল-ফড়িয়াদের দিন শেষ। এখন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হবে।
গতকাল (২৩ নভেম্বর) নওগাঁর সাপাহারে চাষিদের মাঝে প্রণোদনার সার ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অনলাইনে আবেদন করে অ্যাপসের মাধ্যমে চাষিরা ঝামেলাহীনভাবে সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে পারবেন। তিনি বলেন, প্রকৃত কৃষক ছাড়া কারো কাছ থেকে ধান কেনা হবে না। ধান-চাল ক্রয়ে রাজনৈতিক নেতা কিংবা প্রভাবশালীদের স্থান দেওয়া হবে না।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ধান-চাল ক্রয় মনিটরিং করতে মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। টিমগুলো সারা দেশে ধান-চাল সংগ্রহ ও বাজারদর মনিটরিং করবে।
উল্লেখ্য, চলতি আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ৬ লাখ টন ধান কিনবে সরকার। এছাড়া ৩৬ টাকা কেজি দরে সাড়ে ৩ লাখ টন সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন আতপ সংগ্রহ করবে সরকার। গত ২০ নভেম্বর থেকে সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
চলতি বছরের শুরুতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএ বলেছে, বিশ্বে এ বছর ধানের উত্পাদন সবচেয়ে বেড়েছে বাংলাদেশে।
গত কয়েক বছরের অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে মোট চাল উত্পাদন হয় ৩ কোটি ৪৭ লাখ টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ কোটি ৩৮ লাখ টন আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উত্পাদন হয় ৩ কোটি ৬২ লাখ টন। এ বছর চালের উত্পাদন রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে।