অন্যের দোষ গোপন রাখা একটি মানবীয় গুণ। এতে মানুষ বিশ্বস্ত প্রমাণিত হয়; যে লোক দোষ বলে বেড়ায়, সে সবার বিশ্বস্ততা হারায়। সম্পর্কও নষ্ট হয়। উত্তম চরিত্রের দাবি হলো মানুষের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা এবং কথাচ্ছলে কারও কাছে প্রকাশ না করা।
অথচ আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষের চারিত্রিক প্রবণতা হলো কারও গোপনীয় কথা ফাঁস করা, অন্যের দোষ প্রকাশ করা। কারও গোপনীয় বিষয়ে অবগত হতে দেরি হয়; কিন্তু তা প্রকাশ করতে দেরি হয় না। বিশেষ করে এই দোষ আমাদের মা-বোনদের মাঝে একটু বেশিই দেখা যায়; কারও সম্পর্কে বাজে বা মন্দ একটি সংবাদ শুনলেই হলো, কোনো যাচাই-বাছাই নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যের কাছে না বলে ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তি নেই।
এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,‘তোমরা মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি, ভুলভ্রান্তি খুঁজে বের করো না। যে ব্যক্তি অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায় ও প্রকাশ করে দেয়, স্বয়ং আল্লাহ তার দোষ প্রকাশ করে দেন। আর আল্লাহ যার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করেন তাকে নিজের বাড়িতেই লাঞ্ছিত করেন।’ (আবু দাউদ : ৪৮৮০)।
অন্যের দোষ গোপনের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর বহু হাদিস রয়েছে। তিনি এরশাদ করেন ‘যে বান্দা পার্থিব জীবনে মানুষের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে মহান আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন।’ (মুসলিম)।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার সব উম্মতের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে; কিন্তু দোষ-ত্রুটি প্রকাশকারীর গোনাহ মাফ করা হবে না। দোষ-ত্রুটি সে এভাবে প্রকাশ করে যে, কোনো ব্যক্তি রাতের বেলা কোনো কাজ করল, অতঃপর সকাল হলো। মহান আল্লাহ তার এ কাজটি গোপন রাখলেন। সে (সকালবেলা মানুষের কাছে) বলে, হে অমুক! আমি গত রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে রাতযাপন করেছিল এমন অবস্থায় যে, আল্লাহ তার কাজগুলো গোপন রেখেছিলেন আর সে সকালবেলা আল্লাহর এ অন্তরাল সরিয়ে দিল।’ (বোখারি)। সুতরাং নিজের গোপনীয় বিষয়ও অন্যদের কাছে ফাঁস করা যাবে না।
নবী করিম (সা.) এরশাদ করেছেন ‘যে-কেউ অন্যের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (মুসলিম : ২৬৯৯)।
আমরা আজ থেকে প্রতিজ্ঞা করি, কারও দোষ-ত্রুটি অন্যদের কাছে প্রকাশ করব না, পরচর্চা ও পরনিন্দা করব না। সূত্রঃ আলোকিত বাংলাদেশ।