ডিএমপি নিউজঃ কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সনেশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম-বার, পিপিএম-বার বলেছেন, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে লেখক ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার চার্জশীট দেয়া হবে।
আজ ৩ ডিসেম্বর’১৭ দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান সিটিটিসি প্রধান।
লেখক অভিজিৎ হত্যা মামলার তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে তিনি বলেন- লেখক অভিজিৎ রায় গত ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নিহত হন। র্যাবের সহায়তায় আমরা ৮ জন আসামীকে গ্রেফতার করি। পরবর্তী সময়ে তদন্তে একমাত্র ফারাবী ছাড়া অন্য কারও সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমান পাওয়া যায়নি। উস্কানির ক্ষেত্রে ফারাবীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
অভিজিৎ রায়ের কিলার গ্রুপদেরকে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ঘটনা সংঘটিত হবার কিছুদিন পরই চিহ্নিত করেছিলাম। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা সনাক্তকৃতদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করেছিলাম। অভিজিৎ রায় হত্যাকান্ডের নেতৃত্বদানকারী মুকুল রানা ওরফে শরীফ গত বছর পুলিশের অভিযানে নিহত হয়।
মামলা তদন্ত সম্পর্কে তিনি বলেন- ১ মাস আগে অভিজিৎ রায় ও জুলহাস মান্নান হত্যা মামলার তদন্তভার সিটির কাছে ন্যস্ত করা হয়। এ পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে জানা যায়, অপারেশন কমান্ডার ছিল মুকুল রানা। তার নেতৃত্বে তারা হামলা চালিয়েছিল। তাদের প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব ছিল। তদন্তকালীন আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে যেসব তথ্য পেয়েছিলাম তার সাথে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মিল পাওয়া গেছে। বর্তমানে আরও একজন আসামী রিমান্ডে রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এর ফলে বলা যায় অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার রহস্য পুরোপুরি উদঘাটন হয়েছে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার চার্জশীট দেয়া হবে।
অভিজিৎ রায়কে হত্যার মোটিভ সম্পর্কে তিনি বলেন- অভিজিৎ রায় যেহেতু মুক্তমনা লেখক ছিলেন সেহেতু এটা হামলাকারীদের মতাদর্শ বিরোধী ছিল বলে তারা হামলা করে। অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করায় প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা হয় এবং আহমেদ রশিদ টুটুলকে হত্যার চেষ্টা চালায় হামলাকারীরা।
অপর এক প্রশ্নে জুলহাস মান্নান হত্যা মামলার অবস্থা জানতে চাইলে সিটি প্রধান বলেন- জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয় হত্যাকান্ডে ১ জন গ্রেফতার ছিল। সে ঐ ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল না। সে হামলাকারীদের একটি অস্ত্র ও আশ্রয় দিয়েছিল। এই অভিযোগে মূলত তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১৮ নভেম্বর গ্রেফতার হয় আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য মোজাম্মেল হুসেইন ওরফে সাইমন। সে কোন ব্লগার, পাবলিশার্স, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্টকে হত্যা করা হলে আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের পক্ষে দায় স্বীকার করতো। জুলহাস মান্নান হত্যাকান্ডের ক্ষেত্রেও জুলহাসের প্রোফাইল তৈরি করা এবং তার বাসার ঠিকানা বের করে দেয়ার কাজও সে করে। সে এবিটি’র ইন্টেলিজেন্স টিমের প্রধান হিসেবে কাজ করতো।
জুলহাস মান্নান হত্যাকান্ডের যেহেতু রহস্য উন্মোচন হতে শুরু করেছে। এটার চার্জশীট দিতে আর একটু সময় লাগবে।
দীপন হত্যা মামলা সম্পর্কে তিনি বলেন- ব্লগার ও পাবলিশার্স হত্যাকান্ডে অন্যান্য মামলায় এদের অনেকে জড়িত। কোন কোন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। দীপন হত্যা মামলায় বেশ কয়েকজন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সব ঘটনারই রহস্য উদঘাটিত হয়েছে।