ডিএমপি নিউজ : বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, তারা একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবার ফায়দা নিতে আজকের এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। তাদের এই ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। এদেশের জনগণ কখনো এদেরকে সমর্থন দেয়নি এবং তাদের কোন কর্মকাণ্ড পছন্দ করেনা। এই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল অটুট রয়েছে, তারা যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে, বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি।
আজ শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হামলায় নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিয়েও নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে আসা দলটির নেতাকর্মীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মীরা দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের উপর বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ছুড়েছে, লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে, ককটেল ও গুলতি মেরেছে। একজন পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে। তারা দেয়াল টপকিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে প্রবেশ করে এবং সেখানেও তাণ্ডব চালায়। কাকরাইল পুলিশ বক্সে আগুন দেয়। ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে রাখা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও পুলিশের ব্যবহৃত যানবাহন ভাঙচুর করে। এছাড়া কয়েকটি সরকারি স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়। একজন পুলিশ সদস্যের মুখের উপর ককটেল মেরেছে হেলমেট পড়ার কারণে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন।
মন্ত্রী বলেন, ককটেল, চাপাতি ও লাঠিচার্জ এটাই মনে করে দেয় ২০১৪ সালের লাগাতার ৯০ দিন যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছিলো তারা বোধহয় সেই রকম একটা কিছু করতে চায়। আমরা অনেক ধৈর্য্যের সাথে এগুলো দেখছি। তাদেরকে যতটুকু সুবিধা দেওয়ার সবটুকু সুবিধা দিয়েছি। তারপরও তারা সীমানা লঙ্ঘন করে মানুষের প্রপার্টি ধ্বংস করেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে ।
মন্ত্রী আরো বলেন, পুলিশ অনেক ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল নেতা কর্মীরা পুলিশের উপর হামলা করেই ক্ষান্ত হয় নাই। তারা রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সসহ মোট ২৬টি গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। পুলিশের ছোট-বড় স্থাপনায় আগুন দিয়েছে। এই কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে মানুষ সেবা নিতে আসেন, সেই হাসপাতালে তারা ভাঙচুর করেছে, আগুন দিয়েছে। এখানে যারা সেবায় নিয়োজিত ছিলেন তাদের উপর হামলা করেছে। তারা যেখানে যে পুলিশ সদস্যকে পেয়েছে তাদেরকে পিটিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরাদের হামলায় একজন পুলিশ সদস্য নিহত ও শতাধিক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।
মন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপির তান্ডব থেকে রেহাই পায়নি গণমাধ্যমকর্মীরাও। তাদের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে এবং আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এগুলো কোন সভ্য মানুষের কাজ নয়। তাদের এই ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। ২০১৪-তেও করেছে, পূনরায় তারা এগুলো শুরু করেছে। এদেরকে এদেশের জনগণ কখনো পছন্দ করেনা। তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মন্ত্রী বলেন, সবাই দেখেছেন একজন পুলিশ সদস্যকে কীভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। পুলিশ সদস্য পড়ে যাওয়ার পরেও একজন ছাত্রদল নেতা চাপাতি দিয়ে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে তার মাথা ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে। তার ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। সেই পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। এ দৃশ্য সবার হৃদয়ে দাগ কেটেছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মীরা রাস্তায় থাকা সকল সিসিটিভি ক্যামেরা ধ্বংস করে দিয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সাধারণত সুন্দর একটি জাজমেন্টের জন্য, ক্রিমিনালদের ধরার জন্য এবং যে ক্রাইম করে তাকে সনাক্ত করার জন্য এভিডেন্স হিসেবে কাজ করে। এগুলোও তাদের তান্ডব থেকে রেহাই পায়নি।
মন্ত্রী বলেন, আগামীকাল রোববার বিএনপি হরতাল ডেকেছে। তারা গাড়ি-বাস পুড়িয়েছে। এদেশের মানুষ হরতালকে সাপোর্ট করে না। মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করবে। হরতালের নামে যেই গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করবে, গাড়ি ভাঙচুর করবে, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এছাড়াও, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।