আজ ২০ নভেম্বর নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কবি সুফিয়া কামালের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৯ সালের এই দিনে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে।
কবি সুফিয়া কামাল নিজ উদ্যোগে শুধু নিজেকে শিক্ষিত করেননি, পিছিয়ে পড়া নারীসমাজকে শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার আন্দোলনও শুরু করেছিলেন।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারী অধিকার আদায়ের এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ‘জননী সাহসিকা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
বঙ্গভঙ্গ রদ’র বছরেই বাঙালি নারী মুক্তির ত্রাতা হিসাবে আর্বিভাব ঘটে বেগম রোকেয়ার সুযোগ্য উত্তরসূরী কবি সুফিয়া কামালের। পিতৃহারা সুফিয়া শৈশব থেকেই ছিলেন অধিকার সচেতন।
১৯১৮ সালে কোলকাতায় বেগম রোকেয়ার সান্নিধ্যই তাঁকে লেখক ও সমাজকর্মী হিসাবে আত্মপ্রকাশের পথ দেখায়। এরপর মহাত্মা গান্ধীর সাথে অসহোযোগ আন্দোলন, কবিতা নিয়ে কাজী নজরুলের ভূয়সী প্রশংসা কিংবা রবীন্দ্রনাথের সাহচার্য্য সবই ছিল তাঁর আগামী দিনের পাথেয়।
১৯২৩ সালে প্রথম গল্প বালিকা সৈনিক আর ১৯২৬ সালের প্রথম কবিতা প্রকাশ পায় এই কবির। পরে আপন আলোয় আলোকিত হন বাঙলার ঘরে-ঘরে নারী জাগরণে।
পাকিস্তানী দখলদারির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সুফিয়া কামাল। রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষ উদযাপনে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এরপর পাকিস্তানী জান্তার চক্ষুশূল হন তিনি।
দেশমাতৃকার জন্য রাজপথে ছিলেন সরব। স্বাধীনতার পরও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ছিলেন উচ্চকিত। ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির পাশে থেকেছেন আমরণ।
সাহিত্যেও তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। কবিতা-গল্প-ছোট উপন্যাস ছাড়াও প্রবন্ধ-নিবন্ধে দেশ, নারী ও সমাজের গোড়ামির মূলে করেছেন কুঠারাঘাত।
সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।