ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকা হতে উচ্চ বেতনের চাকুরী প্রদানের লোভ দেখিয়ে লিবিয়ায় লোক পাঠানোর নামে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের ২ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (দক্ষিণ) বিভাগ।
গতকাল ৯ মে’১৭ বাড্ডা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হল- ইয়াছিন মিয়া ওরফে শাকিল (২৭) ও মোঃ আলতাফ হোসেন (৫৪)। এছাড়াও উক্ত মানবপাচার ও অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের পলাতক আসামীরা হচ্ছে- মোঃ শফিক মিয়া (২৬), মোঃ শহিদুল ইসলাম ওরফে আনিসুর রহমান ওরফে আনিচ (৩৮), মোঃ হোসেন ফাহিম ওরফে ফাহিম, মোঃ আনোয়ার হোসেন (লিবিয়ায় অবস্থানকারী), আব্দুর রাজ্জাক (লিবিয়ায় অবস্থানকারী)।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি’১৭ পলাতক আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম ওরফে আনিসুর রহমান ওরফে আনিস ভিকটিম হরেন্দ্রলাল রায়ের ছেলে সুমন কুমার রায় ও আব্দুর রহমান এর ছেলে স্বপনকে লিবিয়ায় উচ্চ বেতনের চাকুরী দেবার লোভ দেখিয়ে জনপ্রতি ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দাবী করে প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি হলে আসামীরা সুমন ও স্বপনের পাসপোর্ট তাদের নিকট রেখে দেয়। সুমন ও স্বপন ১৫ এপ্রিল’১৭ লিবিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ে ও ২৩ এপ্রিল’১৭ লিবিয়ায় পৌছায় বলে জানা যায়।
আসামী আনিচ ২৩ এপ্রিল হরেন্দ্রলালকে মোবাইলে তার ছেলে লিবিয়ায় পৌঁছানোর খবর জানিয়ে শফিকের নিকট দুই জনের জন্য ৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিতে বলে। আনিচের কথা মত পরের দিন হরেন্দ্রলাল ও আব্দুর রহমান আসামী শফিককে ৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দেন।
একই দিনে আনিচ আবার হরেন্দ্রলালকে মোবাইল করে আরো ৫ লক্ষ টাকা চায়। টাকা না দিলে সুমন ও স্বপনকে লিবিয়ায় আটকে রাখা হবে বলে জানায়। পরে তারা বাধ্য হয়ে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা আনিচকে পাঠায়।
উক্ত সব টাকা পাঠানোর পর শাকিল ফোন দিয়ে বলে সব টাকা আনিচ নিয়ে গেছে আপনারা দুইজন মিলে আরো ৭ লক্ষ ৫০ টাকা তাকে দিতে বলে। না দিলে সুমন ও স্বপনকে লিবিয়াতে আটকাবস্থা থেকে ছাড়া হবে না। পরে গত ২৬ এপ্রিল’১৭ তারা ২লক্ষ টাকা করে মোট ৪ লক্ষ টাকা ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করে।
পরবর্তীতে ৩ মে’ ১৭ শাকিল ফোন করে আরো টাকা চাইলে হরেন্দ্রলাল ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা এবং আব্দুর রহমান ৪ মে’১৭ তারিখে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা একই ব্যাংকে প্রদান করে।
এতো টাকা দেয়ার পরও আসামীরা সুমন ও স্বপনকে না ছাড়লে বাধ্য হয়ে তারা ডিএমপি’র ডিবি, পুলিশের উর্ধ্বতন অফিসারের স্মরনাপন্ন হয়। পরে পুলিশ আসামী শাকিল ও আলতাফদ্বয়কে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর লিবিয়া থেকে সুমন ও স্বপন জানায় যে, লিবিয়ায় থাকা আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং আব্দুর রাজ্জাক তাদেরকে আটক অবস্থা থেকে ছেড়ে দিয়েছে এবং আরো জানায় যে, আটক অবস্থায় উক্ত আসামীদ্বয় তাদের মারপিটসহ প্রচুর নির্যাতন করেছে। বর্তমানে সুমন এবং স্বপন জিম্মি-দশা থেকে মুক্ত হয়ে লিবিয়ায় নিরাপদ হেফাজতে আছে।