উদ্বোধন হয়েছে পশ্চিম এশিয়ার সবচেয়ে বড় মন্দিরের। বুধবার মন্দির উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই মন্দির তৈরি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আবু ধাবির শেখ জায়েদ হাইওয়ের কাছে অবস্থিত আবু মুরেইখা এলাকায় তৈরি হয়েছে বিএপিএস (বোচাসনবাসি শ্রী অক্ষর পুরুষোত্তম স্বামীনারায়ণ সংস্থা)-এর হিন্দু মন্দির। এটি পশ্চিম এশিয়ার বৃহত্তম মন্দির।
আবু মুরেইখায় ২৭ একর এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে এই মন্দির। মন্দিরের জন্য জমি দান করেছে আরব আমিরশাহি সরকার। মন্দির নির্মাণে খরচ হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ৭০০ কোটি টাকা। ১৮ লক্ষ ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মন্দির। মূলত গোলাপি রঙের বেলেপাথর এবং মার্বেল দিয়ে নির্মিত এই মন্দিরের শোভা নজরকাড়া।
৪০ হাজার ঘনমিটারের মার্বেল এবং ১ লক্ষ ৮০ হাজার ঘনমিটারের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে। মন্দিরে মোট মোট সাতটি শৃঙ্গ রয়েছে। প্রতিটি শৃঙ্গ আরব আমিরশাহির এক এক জন আমিরকে চিহ্নিত করে।
গত তিন বছর ধরে রাজস্থান এবং গুজরাত থেকে দু’হাজারেরও বেশি শিল্পী সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে গিয়ে মন্দিরের সাদা মার্বেলের স্তম্ভ নির্মাণ করেছেন। মন্দিরে থাকা ৪০২টি স্তম্ভ নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন দু’হাজারেরও বেশি কারিগর। মন্দিরের স্তম্ভ যে সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি, সেগুলি গ্রিসের ম্যাসিডোনিয়া থেকে আনা।
মন্দিরের অভ্যন্তর দেখেও তাক লেগে যাবে। অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে শুরু করে গ্যালারি, কী নেই সেই মন্দির চত্বরে! বইপ্রেমীদের জন্য আলাদা গ্রন্থাগারের ব্যবস্থাও মন্দিরের সামনে করা হয়েছে। মজলিসের পাশাপাশি মন্দিরের ভিতরে রয়েছে দু’টি কমিউনিটি হল। দু’টি হল মিলিয়ে পাঁচ হাজার লোক একসঙ্গে বসতে পারেন। যাঁরা খাওয়াদাওয়া করতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য হিন্দু মন্দির চত্বরে রয়েছে একটি ফুড কোর্ট। রয়েছে বাগান এবং শিশুদের জন্য খেলার জায়গা।
প্রাচীন ভারতীয় শৈলীর অনুসরণে মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে। মার্বেল এবং বেলেপাথরের উপর ভাস্কর্য তৈরি করে সেগুলি ভারত থেকে আবু ধাবি পাঠিয়েছেন ভারতীয় শিল্পীরা। ৪০২টি স্তম্ভের পাশাপাশি হিন্দু মন্দিরে রয়েছে দু’টি গম্বুজ। মন্দিরে পুজো করা হবে রাম, সীতা, কৃষ্ণ, আয়াপ্পন এবং স্বামীনারায়ণের।
কর্তৃপক্ষের দাবি, আবু ধাবির মন্দিরটি এমন ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যে, রিখটার স্কেলে সাত মাত্রার ভূমিকম্পনও মন্দিরের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। উদ্বোধনের আগে ২৯ জানুয়ারি ৪২টি দেশের প্রতিনিধি গিয়েছিলেন মন্দির দর্শনে। বুধবার মন্দিরটির উদ্বোধন হলেও জনসাধারণের জন্য মন্দিরটি ১৮ ফেব্রুয়ারি খোলা হবে।-আনন্দবাজার