ডিএমপি নিউজঃ শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত তাজিয়া শোক মিছিল ও অন্যান্য অনুষ্ঠানকে ঘিরে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানীর হোসাইনী দালান ইমামবাড়া কেন্দ্রীক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা জানালেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
আজ (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় শিয়া সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে রাজধানীর হোসাইনী দালান ইমামবাড়ায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আশুরা ও তাজিয়া শোক মিছিলের নিরাপত্তা সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার বলেন- তাজিয়া শোক মিছিল উপলক্ষে রাজধানীর বড় কাটারা ইমামবাড়া, খোজা শিয়া ইসনুসারী ইমামবাড়া এবং বিবিকা রওজায় নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিবারের ন্যায় এবারও শান্তিপূর্ণভাবে ১০ মহরমে বড় তাজিয়া শোক মিছিল হবে। সুদৃঢ়, সমন্বিত ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে পালিত হবে তাজিয়া শোক। সেলক্ষ্যে আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি ইমামবাড়া সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে প্রত্যেক দর্শনার্থীর দেহ তল্লাশী করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করানো হবে। ডিএমপি’র ডগ স্কোয়াড ও স্পেশাল ব্রাঞ্জ অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থল সুইপিং করবে। যেসব রুট দিয়ে শোক মিছিল যাবে সেসব রুটে থাকবে আমাদের রুফটপ ডিউটি, রোড ব্যারিকেড ব্যবস্থা, গাড়ি ও ফুট পেট্রোলিং। মিছিলের আগে, মাঝে, পাশে ও পিছনে থাকবে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শোক মিছিলের নিরাপত্তায় সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। অনেক আগে তাজিয়া শোক মিছিলকে কেন্দ্র করে বিশৃংখলা থাকলেও বর্তমানে সুশৃংখলা এসেছে।
তিনি বলেন- শিয়া সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে আমরা শোক মিছিলের রুট নির্ধারণ করেছি। নির্ধারিত রুট ও সময়সীমা মেনে এবং নির্ধারিত সময়ে তাজিয়া মিছিল শুরু ও শেষ করতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে শোক মিছিলে ব্যবহৃত নিশান এর উচ্চতা ১২ ফুট এর বেশী হবে না। মিছিলে কোন পাইক অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তাজিয়া শোক মিছিলকে ঘিরে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্চাসেবক নিয়োগ করবেন আয়োজকরা। স্বেচ্ছাসেবকরা নির্ধারিত পোশাক, আর্মড ব্যান্ডসহ ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখবে।
কমিশনার আরও বলেন- শোক মিছিলে কেউ অংশগ্রহণ করতে চাইলে তাকে মিছিল শুরুর স্থানে যেতে হবে। রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলি গলি থেকে তাজিয়া শোক মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না। মিছিল শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সকলকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশী করে শোক মিছিলে ঢুকতে দেয়া হবে। তল্লাশী ব্যতিত কোন অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেয়া হবে না। শোক মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় কোন প্রকার শক্তি প্রদর্শন বা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যাবে না।
এছাড়াও কমিশনার বলেন, তাজিয়া শোক মিছিলে কোন প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, চায়ের ফ্লাক্স, পেসার কুকার, লাঠি, ছোঁড়া, চাকু, তরবারি/ তলোয়ার, বর্শা, ঢাক-ঢোল বাজানো, উচ্চ শব্দে পিএ সেট বাজানো, আগুন ও আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। পোশাকেও ধাতব পদার্থ, ছুরি, চাকু, ব্লেড, তলোয়ার প্রভৃতি ব্যবহার করা যাবে না।
নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে কমিশনার বলেন, সকলের সহযোগিতা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে সুশৃংখল ও নিরাপদ পরিবেশে মহরমের সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশিকালে একটু সময় লাগবে, বিধায় ধৈর্য ধরে তল্লাশিতে পুলিশকে সহযোগিতা করুন। সেই সাথে আমাদের উল্লেখিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।