ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ সুলাওয়েসিতে রুয়াং আগ্নেয়গিরিতে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার পর ওই এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আশপাশের এলাকার ১১ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। আগ্নেয়গিরির ছাই-লাভায় ছেঁয়ে গেছে আকাশ। এতে ওই অঞ্চলে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশে অবস্থিত মাউন্ট রুয়াংয়ে মঙ্গলবার রাত পৌনে দুইটার দিকে প্রথম অগ্ন্যুৎপাত হয়। এতে আকাশ ধোঁয়া ও ছাইয়ের মেঘে ছেয়ে যায়। বুধবার আরও চার দফা অগ্ন্যুৎপাত ঘটায় রুয়াং। এরপরই কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ৩৭৯ ফুট উচ্চতার পর্বতটির অগ্ন্যুৎপাতের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে।
ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি সংস্থার কর্মকর্তারা আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জানান, সতর্কতার স্তর ৪ মাত্রায় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা স্কেলে সর্বোচ্চ। জ্বালামুখ থেকে চারপাশে চার থেকে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত ছাই-লাভা পতিত হওয়ায় এসব এলাকা সতর্কতার আওতায় থাকবে।
কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কিছু অংশ সমুদ্রে পড়তে পারে এবং তাতে সুনামির সৃষ্টি করতে পারে।
প্রাদেশিক রাজধানী মানাডো থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত রুয়াং পর্বত। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুয়াং থেকে এরইমধ্যে অন্তত ৮০০ জনকে কাছের তাগুলান্দাং দ্বীপে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ছাই-লাভার পতিত অঞ্চল প্রশস্ত হওয়ায় আরও ১১ হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া দরকার।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ সংস্থার তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের প্রধান আবদুল মুহারি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকা কমপক্ষে ১১ হাজার ৬১৫ জন বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হচ্ছে। তাদের রাজধানী মানাডোতে নিয়ে আসা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক সংস্থার প্রধান মুহাম্মদ ওয়াফিদ জানান, রুয়াংয়ের প্রাথমিক অগ্ন্যুৎপাতের ছাই কলাম আকাশে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছে, দ্বিতীয়দিনের অগ্ন্যুৎপাত আড়াই কিলোমিটার উচ্চতায় ছাই-লাভা ঠেলে দিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে ছড়িয়ে থাকা ‘রিং অফ ফায়ার’ খ্যাত অশ্বক্ষুরাকৃতির টেকটোনিক ফল্ট লাইনে বরাবর অবস্থিত, যেখানে ১২০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কিছু অংশ সাগরে পতিত হওয়ায় সুমাত্রা ও জাভা উপকূলে সুনামির সৃষ্টি হয়েছিল, যাতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়।