ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর কর্মব্যস্ত মানুষগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে শহরের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে। অনেকেরই ইফতারের আগে বাড়ি ফেরা হয়ে উঠে না। বাধ্য হয়েই তারা ইফতারি করছেন রাস্তায় কিংবা ফুটপাতে। আপনার হয়তো জানা নেই, এই খাবারগুলোর সাথে হয়তোবা পূর্ব থেকেই মিশানো থাকতে পারে নেশা জাতীয় দ্রব্য। আর এমনটা করছে রাজধানীর ব্যস্ততম স্থানগুলোকে টার্গেট করে গড়ে উঠা অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা। আপনিও হতে পারেন তাদের এমন টার্গেটের শিকার। তারা ইফতারের বিভিন্ন খাবারের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে আলাদা করে রাখে। তারপর টার্গেটকৃত ব্যাক্তিকে উক্ত খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে লুটে নেয় তার সর্বস্ব। কখনো বা তারা ইফতারির সময় ফেরিওয়ালা সেজে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশ্রিত খাবার নিয়ে উঠে পরে বিভিন্ন যাত্রীবাহী যানবাহনে। সে খাবারগুলো সাধারণ মানুষের কাছে তারা বিক্রি করে। বিশ্বাস স্থাপনের জন্য সাধারণ যাত্রীদের পাশে বসে থাকা তাদের দলের অন্য সদস্যরা আগে খাবার কিনে। তারপর পাশা থাকা যাত্রীদেরকেও খাবার কিনতে আগ্রহী করে তোলে। এরপর ইফতার খেয়ে সাধারণ যাত্রীরা অজ্ঞান হয়ে পরলে সুযোগ বুঝে সবকিছু লুটে নেয় তারা।
এ বিষয়ে আজ ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এমনটি জানান ডিবি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক টিম গত ২৪ ঘন্টায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির ৬১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
গত ২৬ মে’১৮ গোয়েন্দা পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ বিভাগের কয়েকটি টিম রাজধানীর শ্যামলী, জুরাইন, কমলাপুর ও নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান করে ৩২ জন অজ্ঞান পার্টির এবং সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের কয়েকটি টিম রাজধানীর গুলিস্থান, নিউমার্কেট, শাহবাগ এলাকায় অভিযান করে ২৯ জন ছিনতাইকারী গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের সময় তাদের নিকট হতে ৯২টি লেক্সোটেনিল ও ৪০টি লুজিকাম চেতনানাশক ট্যাবলেট এবং ২টি ঝান্ডুবামসহ একাধিক মলমের কৌটা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জানায়, রাজধানীতে সরল ও নিরীহ যাত্রীদের টার্গেট করে তাদের সাথে কৌশলে আলাপচারিতার মাধ্যমে ইফতারির খাদ্যদ্রব্যসহ চা, ডাব, পানি ও জুস ইত্যাদি বিভিন্ন খাবার খাওয়ার অনুরোধ করে। রাজি হলে যাত্রীদের ট্যাবলেট মিশ্রিত চা, ডাব, পানিও জুস ইত্যাদি খাওয়ায়। খাবার খেয়ে যাত্রীরা অজ্ঞান হলে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যাত্রীদের এবং মার্কেটে আসা ক্রেতাদের সুকৌশলে ও সরলতার সুযোগ নিয়ে নাকে মুখে ও চোখে চেতনানাশক মলম লাগিয়ে তাদের নিকট হতে মোবাইল, ব্যাগ ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়।