ডিএমপি নিউজঃ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ধাতব কয়েন দেখিয়ে অভিনব কায়দায় প্রতারণার অভিযোগে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ইমরান হোসেন চৌধুরী ওরফে দুলাল, মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে অলি ও কাজী মাসুদ পারভেজ ওরফে শাহনেওয়াজ। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ০২টি ধাতব কয়েন, প্লাস্টিকের বক্স, পিন, ধান, তুলা, স্ট্যাম্প ও চেক উদ্ধার করা হয়।
লালবাগ বিভাগের অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ ফজলুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম ডিএমপি নিউজকে বলেন, পুরাতন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ধাতব কয়েন বিক্রি করে অনেক অর্থ পাওয়া যাবে। এভাবে প্রতারক চক্র প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। এমন এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৫ মার্চ ২০২২ তারিখে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা রুজু হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
তিনি আরো বলেন, মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। অতঃপর শনিবার (২৬মার্চ ২০২২) দুপুর ২:২০টায় উত্তরা ৫নং সেক্টর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম।
গ্রেফতারকৃতদের অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা প্রথমে অর্থশালী নিরীহ লোকদেরকে টার্গেট করে। তাদের কাছে পুরাতন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ধাতব কয়েন আছে এবং এগুলোর অনেক অলৌকিক ক্ষমতা আছে বলে বিভিন্ন ছলচাতুরীর মাধ্যমে ভিকটিমদের মাঝে বিশ্বাস জন্মায়। প্রতারকরা দেখায় ধাতব কয়েন ধান, গম বা এ জাতীয় জিনিস কাছে টেনে নেয় এবং ধাতব কয়েনে আগুন ধরে যায়।
প্রতারণার এই কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতারকচক্র কৌশলে ধানের বা গমের মধ্যে ছোট চিকন পিন ঢুকিয়ে একটি কাগজের এক প্রান্তে রাখে এবং কাগজের অন্য প্রান্তে কয়েন রাখে। একটি চুম্বক খন্ড আঙ্গুলের মাথায় আঠা দিয়ে লাগিয়ে কাগজের নিচ দিয়ে ধান বা গম বরাবর অবস্থান করায়। অতঃপর তারা তাদের আঙ্গুল আস্তে আস্তে কয়েনের দিকে সরাতে থাকে। ফলে ধান চুম্বকের আকর্ষণে ধাতব কয়েনের দিকে আগাতে থাকে।
প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, প্রতারকচক্র প্রথমে তুলায় ফসফরাস মাখে, অতঃপর সেই তুলার মধ্যে ধাতব কয়েন রেখে শক্ত করে টেপ দিয়ে বেধে রাখে। কিছুক্ষণ পরে সেটা খুললে ফসফরাস বাতাসের সংস্পর্শে এসে আগুন ধরে যায়। এভাবে তারা মস্তিস্কে ধাধা লাগিয়ে মানুষের মনে বিশ্বাস অর্জন করে। এই ধাতব কয়েন বিক্রি করে অনেক অর্থ পাওয়া যাবে এমন প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
প্রতারক চক্রের অন্যান্য সহযোগিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে জানান গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা।
গ্রেফতারকৃতদের উত্তরা পশ্চিম থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।