ডিএমপি নিউজঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহযোগিতায় ২৫ মার্চ রাতে উদযাপিত হলো জাতীয় গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতার প্রথম প্রহর।
রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে স্বাধীনতার প্রথম প্রহর উপযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি, বিশেষ অতিথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার), অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোঃ মোখলেছুর রহমান বিপিএম (বার), ডিজি র্যাব বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার), ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কন্ঠশিল্পী ফকির আমলগীরসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে রাজারবাগের বীর পুলিশ সদস্যদের হাত থেকে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। পুলিশই প্রথম পাক আর্মিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বুলেটটি ছুঁড়ে ছিলো। ঐদিন এই রাজারবাগে আত্মহুতি দিয়েছিল অনেক বীর সাহসী পুলিশ সদস্য।
তিনি আরো বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি, ৭ মার্চ যেভাবে বিশ্বের বুকে মর্যাদার সাথে স্বীকৃতি পেয়েছে ঠিক তেমনি একদিন ২৬ মার্চ মর্যাদার সাথে বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হবে। বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে এসে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন তোমরা স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশ, তোমাদের জনগণের বন্ধু হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা বর্তমানে বাস্তবিত। আজ পুলিশ জনগণের বন্ধু হয়েছে। তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সাথে পালন করছে। যদি আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী শক্ত অবস্থানে না থাকতো তাহলে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে চলতে পারতাম না।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আইজিপি বলেন, রাজারবাগের অকুতোভয় বীর পুলিশ সদস্যরা অসীম বীরত্বের সাথে সামান্য ‘থ্রি নট থ্রি’ রাইফেল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বুলেটটি ছুঁড়ে ছিল পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে। এতে অনেক বীর পুলিশ সদস্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমাদের পূর্বসূরিদের মত আমরা দেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করবো। এই দেশকে রক্ষার্থে পুলিশ জীবন দিয়েছিলাম ১৯৭১ সালে জীবন দিয়েছে ২০১৩ সাল থেকে আজ অবদি। আমাদের পূর্বসূরিরা আমাদের অনুপ্রেরণা উৎস।
মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য হতে পেরে আমি অত্যান্ত গর্বিত। কারণ মহান মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি উত্তরাধিকার আমরা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে সর্বপ্রথম পাকিস্তানি আর্মি আক্রমন করেছিল পবিত্র ভূমি রাজারবাগে। আমাদের ভাইয়েরা ‘থ্রি নট থ্রি’ রাইফেল দিয়ে মেশিনগ্যান, কামানের বিরুদ্ধে একটি অসম যুদ্ধ করেছিল। শুধু মাত্র দেশের প্রতি ভালোবাসার বলে বলিয়ান হয়ে তাঁরা যুদ্ধ করেছিল। তাঁরা জীবন দিয়ে আমাদের প্রিয় এই লাল-সবুজের পতাকা উপহার দিয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকারী। এটি আমাদের অহংকার, এটি আমাদের প্রেরণা।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আজ অবদি আমরা বাংলাদেশ পুলিশের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার প্রথম প্রহর উদযাপন করে আসছি। পুলিশ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড দিয়ে মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে। শ্রদ্ধা জানাই ঐ সকল বীর পুলিশ সদস্যকে। যাঁরা এদেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।
এর আগে বাংলাদেশ পুলিশ সাংস্কৃতিক পরিষদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশনা করেন। আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্য শেষে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা করা হয়।