নতুন বছরে দেশে নতুন জ্বালানি হিসেবে যুক্ত হতে যাচ্ছে এলএনজি (তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস)।
আগামী এপ্রিল মাস থেকে দেশের ইতিহাসে সম্পূর্ণ নতুন জ্বালানি হিসেবে আমদানি করা হবে এ তরল গ্যাস। দেশের শিল্প খাতে বিদ্যমান গ্যাস সংকট মেটাতে এ গ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। একইসাথে এ বছর দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। ফলে গত বছরের ডিসেম্বরে যে তীব্র লোডশেডিং হয়েছিল তা থেকে মুক্ত হতে যাচ্ছে দেশ।
জানা গেছে, বিদ্যুত্ ও জ্বালানি সংকট দূর করার লক্ষ্যে যত দ্রুত সম্ভব এলএনজি এবং দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ প্রসঙ্গে সরকারের এক শীর্ষ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম বড় সাফল্য বিদ্যুৎ বিতরণ পরিস্থিতি উন্নত করা। তেলভিত্তিক কয়েকটি কেন্দ্রের কাজ যেভাবে এগুচ্ছে তাতে অন্তত ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। এ ছাড়া ক্রমবর্ধমান গ্যাস সংকটের কারণে শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে হতাশা রয়েছে। এলএনজি আমদানিতে সে হতাশাও কাটবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে আমরা জাতীয় গ্রিডে গড়ে ৮০০-৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করেছি। ২০১৮ সালে গ্রিডে দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। এটি বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে। তিনি আরো বলেন, আগামী বছর বিদ্যুৎ এবং তেলের দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেই। তবে গ্যাসের দাম আরেকবার সমন্বয় করার দরকার হবে।
গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহ সমান হবে: বর্তমানে দেশে দৈনিক গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা রয়েছে অন্তত ৩ হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সংকট ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের। এ অবস্থায় আগামী এপ্রিলে পেট্রোবাংলার উদ্যোগে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি শুরু হলে সংকট কমবে। একই বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে সামিট গ্রুপের আরো ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি শুরুর কথা রয়েছে। পেট্রোবাংলার পূর্বাভাস অনুযায়ী বছরের শেষ নাগাদ গ্যাসের চাহিদা দাঁড়াবে ৩ হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ছাড়া দেশের গ্যাসক্ষেত্র থেকেও আরো বেশি গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহ সমান সমান হওয়ার পথে হাঁটছে দেশ।