টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় রিপোর্টে এসডিজিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে গত ১৭ জুলাই চলতি হাই লেভেল পলিটিক্যাল ফোরামের ভলান্টারি ন্যাশনাল রিভিউ (ভিএনআর) সেশনে ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দারিদ্র বিমোচন এবং সমৃদ্ধি অর্জনে প্রাধিকার’ শিরোনামে এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ক এ জাতীয় রির্পোট উপস্থাপন করা হয়।
আজ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় উপস্থাপিত রিপোর্টে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন কৌশল তুলে ধরে বলা হয় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজিকে সন্নিবেশিত ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে এসডিজিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এসডিজি ট্রাকার সৃষ্টি, আন্তঃমন্ত্রণালয় এসডিজি বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটি গঠন, মন্ত্রণালয়ের ম্যাপিং এবং ডেটাগ্যাপ এনালাইসিস এর মতো বিষয়গুলোও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
গত ১৭ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত মন্ত্রী পর্যায়ের এই সেগমেন্টে ৪৪টি দেশ তাদের ন্যাশনাল রিপোর্ট উপস্থাপন করবে। মন্ত্রী পর্যায়ের এ পর্বে বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নেতৃত্ব দেন। ভিএনআর-এ বাংলাদেশের জাতীয় রির্পোট উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি বাস্তবায়নের মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ।
মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে গত দুইবছরে এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতির এই ন্যাশনাল রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। রিপোর্টে দারিদ্র্য নির্মূল, ক্ষুধা, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ, লিঙ্গ সমতা, শিল্প উদ্ভাবন ও অবকাঠামো, জলজ জীবন ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব- এসডিজির এ ৭টি অভীষ্ট বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অর্জনসমূহ উল্লেখ করা হয়।
ভিএনআর প্রেজেন্টেশনে দেশের উন্নয়নের পরিমাপক হিসেবে বিভিন্ন আর্থসামাজিক প্রবৃদ্ধির তথ্য প্রদর্শন করা হয়। দেখানো হয় উচ্চ ও নিম্ন দারিদ্র্য রেখা যথাক্রমে শতকরা ২৪ দশমিক ৩ ও শতকরা ১২ দশমিক ৯ ভাগে নেমে এসেছে, যা ১৯৯১ সালে ছিল যথাক্রমে শতকরা ৫৬ দশমিক ৭ ও শতকরা ৪১ দশমিক ১।
রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রীর প্রাধিকার প্রকল্প একটি বাড়ি একটি খামারের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণ, ডিজিটাল ফিনানসিয়াল সার্ভিস এবং জনগণের দোরগোড়ায় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে গৃহীত বিশেষ বিশেষ কর্মসূচিগুলো তুলে ধরা হয়। পদ্মা সেতুসহ মেগা অবকাঠামো প্রকল্পসমূহও স্থান পায়।
২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা, ২০৩০ সালে এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের মহাসড়কে উপনীত হওয়া, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়া, ২০৭১ সালে স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তিতে বাংলাদেশকে উন্নয়নের বিস্ময়ে পরিণত করা এবং ২১০০ সালে ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিরাপদ ব-দ্বীপ হিসেবে গড়ে তোলা, বাংলাদেশকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ৫টি ভিশন রিপোর্টে সন্নিবেশিত করা হয়।
এই রিপোর্টে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কোন অবস্থানে রয়েছে, চ্যালেঞ্জসমূহ কী এবং এসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশলসমূহ প্রতিফলনের পাশাপাশি এসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের ওপর জোর দেয়া হয়েছে ।