ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর কদমতলী এলাকার ক্লুলেস রাসেল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকান্ডে জড়িত প্রধান আসামীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রো।
গ্রেফতারকৃত দুইজন হলো- প্রধান আসামী সজল @ পিচ্চি সজল (২২) ও মোঃ হোসেন বাবু @ হুন্ডা বাবু (২৫)। ০৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে সকাল ০৭.৩০ টায় বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানার আমতলী এলাকা হতে পিচ্চি সজলকে এবং একই তারিখে সন্ধ্যা ০৬.৪৫টায় শ্যামপুর থানাধীন হাজীগেট ব্যাংক কলোনী হতে হুন্ডা বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। আটককৃতদের হেফাজত হতে উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত ২ টি চাকু উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে, পিবিআই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ১০/১০/২০১৫ খ্রিঃ রাত্র আনুমানিক ১১.০০ টায় কদমতলী থানাধীন বড়ইতলা মোড়ে কে বা কাহারা ছুরি দিয়ে ভিকটিম রাসেল ও পারভেজকে আঘাত করতঃ রক্তাক্ত জখম করে। গুরুতর রক্তাক্ত জখমী পারভেজ ও রাসেল এর ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে এবং চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ভিকটিম রাসেল মারা যায়। কিন্তু কি কারনে এবং কারা রাসেলকে হত্যা করলো সে সর্ম্পকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়ভাবে এলাকায় লোকমুখে প্রচার পেতে থাকে যে, উক্ত ভিকটিম রাসেল ছিনতাইকারী কর্তৃক ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে মারা যায়। ঘটনার পরদিন ১১/১০/২০১৫ তারিখ ভিকটিম রাসেলের মা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংবাদ পান যে, রাসেল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে মারা গেছে। তখন রাসেলের মা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে ডান পাজরে পিঠের দিকে ব্যান্ডেজ অবস্থায় তার ছেলের লাশ সনাক্ত করেন।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা রাশিলা বেগম (৪০) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কদমতলী থানার মামলা নং-১৯ তারিখ-১৩/১০/২০১৫ খ্রিঃ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।
আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই জানতে পারে, অত্র মামলার ভিকটিমের বাড়ী খুলনা জেলার রূপসা থানা এলাকায়। গ্রেফতারকৃত আসামী সজল ভিকটিমের একই গ্রামে বিয়ে করে। সেই সুবাদে উভয়ের মধ্যে সু-সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামী সজল ঢাকার কদমতলী এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতো। উক্ত আসামী বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামী হওয়ায় সে তার শ্বশুরবাড়ী এলাকায় অবস্থান করতো। ঐ সময় ভিকটিম রাসেল এর সাথে আসামীর সখ্যতা গড়ে ওঠে। সখ্যতার একপর্যায়ে সে রাসেলকে ঢাকায় টায়ারের ফ্যাক্টরীতে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে আসে। ঢাকায় আসার পরে চাকুরী দেওয়ার কথা বলেও চাকুরী না দেওয়া তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াবা সেবন শেষে আসামী সজল ও বাবু তাদের কোমড়ে থাকা চাকু দ্বারা এলোপাথারীভাবে পারভেজ ও রাসেলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
আটক আসামীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় বেশকিছু মামলা রয়েছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত অন্যান্য সহযোগী আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।