প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সাম্প্রতিক কম্বোডিয়া সফরকে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আখ্যায়িত করে এই সফর দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা আরো জোরদার করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ সফর বন্ধুপ্রতীম কম্বোডিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা সুদৃঢ় ও গভীরতর করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে এবং দু’দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসবভবন গণভবনে সাম্প্রতিক কম্বোডিয়া সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের আমন্ত্রণে গত ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী কম্বোডিয়া সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সহায়তা করার ব্যাপারে আমার অনুরোধে তিনি ইতিবাচক সাড়া দেন। তিনি আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রার্থিতার পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করেন। তাছাড়া, ‘মেকং-গঙ্গা সহযোগিতা ফোরাম’-এ বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন।দু’দেশের মধ্যে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা একমত হই।
সফরে স্বাক্ষারিত ১০টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো হচ্ছে-
(ক) জয়েন্ট ট্রেড কাউন্সিল গঠন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(খ) ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(গ) শ্রম ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ খাত সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(ঘ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(ঙ) পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(চ) যুদ্ধের ইতিহাস, স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক;
(ছ) মৎস্য ও অ্যাকুয়াকালচার বিষয়ক সমঝোতা স্মারক;
(জ) বিনিয়োগ প্রসার সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(ঝ) উভয় দেশের শীর্ষ বাণিজ্যিক সংগঠনের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি;
(ঞ) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং রয়্যাল একাডেমি অব কম্বোডিয়া (আরএসি)-এর মধ্যে একাডেমিক পর্যায়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।
সরকার প্রধান বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আলোচনার আলোকে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ আনুষ্ঠানিক যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।