সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪টা থেকে কলকাতাসহ রাজ্যের পৌরশহরগুলোতে অত্যাবশ্যক এবং আপৎকালীন বিষয় ছাড়া যাবতীয় প্রকাশ্য কার্যকলাপ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
রবিবারই কেন্দ্রের তরফ থেকে কলকাতা-সহ দেশের ৭৫টি জেলা লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রে। ওই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছিল, রাজ্য সরকারগুলি চাইলে সেই লকডাউনের এলাকা বাড়াতে পারে। তার পরেই রবিবার নবান্ন থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পৌর শহরকে লকডাউন করার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
ভারতের করোনা সংক্রমণের যে হিসাব দেয়া হচ্ছে এতে পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতার পরিস্থিতি অন্য কয়েকটি রাজ্যের চেয়ে তুলনামূলক ভালো। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কলকাতাসহ রাজ্যের সব পৌরশহরকে লকডাউন করে দেয়ার পথে এগুচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারতে ‘জনতা কারফিউ’ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে এই কারফিউ।
গত সপ্তাহেই করোনার বিস্তার ঠেকাতে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আজ দেশজুড়ে এ কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন ভারতীয়রা।
জনতা কারফিউয়ের কারণে রোববার সকাল থেকেই ফাঁকা বেশিরভাগ শহরের রাস্তাঘাট, বন্ধ দোকানপাট। জরুরি প্রয়োজনে অল্প কিছু লোক ঘর থেকে বের হচ্ছেন। রাস্তায় সরকারি বাস থাকলেও তাতে যাত্রী নেই বললেই চলে।
রোববার ভোরে এক টুইটবার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আর কিছুক্ষণের মধ্যে জনতা কারফিউ শুরু হবে। আসুন, আমরা সবাই এই কারফিউতে সামিল হই, যা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি যোগাবে। আমরা এখন যে পদক্ষেপ নিচ্ছি, তা আগামীতে সাহায্য করবে। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।’
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে ৮৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩২ জন, মারা গেছেন অন্তত চারজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্য দেশের মতো কোভিড-১৯ বিস্তারের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ভারত। এ সংক্রমণ এখনই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে খুব শিগগিরই আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে সেটি।
করোনা প্রতিরোধে ইতোমধ্যে দেশটির বেশ কয়েকটি রাজ্যে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। গুজরাটের অন্তত চারটি শহর আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী রাজস্থান অবরুদ্ধ ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এছাড়া পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে আন্তঃরাজ্য বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।