কিশোরগঞ্জ হাওরবাসীর জীবনমান পাল্টে দিতে হাওরের বুকজুড়ে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ৩০ কিলোমিটার পাকা সড়ক। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৃষ্টিনন্দিত এই ৩০ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ১৪টি সেতু, ৬২টি কালভার্ট ও ৩৭টি ইরিগেশন চ্যানেল। পুরো প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৮৭৪ কোটি টাকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে ইতিবাচক ছোঁয়া লাগবে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। হাওরে শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে চায় সরকার।
এর ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে ইতিবাচক ছোঁয়া লেগেছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। সেই সাথে তৈরি হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা।
বর্ষায় মাইলের পর মাইল বিস্তির্ণ জলরাশি, বর্ষা শেষে জলকাদা আর শুকনো মৌসুমে ফসলি জমি। বর্ষায় নৌকা আর অন্য ঋতুতে পায়ে হাঁটা ছাড়া চলাচলের উপায় ছিল না হাওরবাসীর। যোগাযোগে এখানকার মানুষের কষ্ট লাঘবে বিশাল হাওরের মধ্যে সড়ক নির্মাণের স্বপ্ন দেখেন ‘ভাটির শার্দুল’ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ইচ্ছে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ জেলার তিন উপজেলার মধ্যে সারা বছর চলাচলের জন্য নির্মিত হয় হাওরের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক। সড়কটি নির্মাণের ফলে শুধু হাওরবাসীর চলাচলের দুর্ভোগ দূর হয়েছে তা নয়, নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে।
ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কটি এখন আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। এরইমধ্যে হাওরের নৈসর্গিক রূপ দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে ছুটে আসছে মানুষ।
হাওরের বিশাল জলরাশির বুক চিরে চলে গেছে ২৯.৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি। বর্ষায় সড়কের দু’পাশে অথৈ জলরাশি, নির্মল বাতাস আর মনকাড়া ঢেউ। শুকনো মৌসুমে মাইলের পর মাইল ফসলি জমি, যেখানে সবুজ আর সোনালি রং মিলেমিশে একাকার। হাওরের বুকে বিশাল খোলা আকাশের রূপে মুগ্ধ ভ্রমণপিপাসুরা। কখনো ঝকঝকে নীল আকাশ, কখনো আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। ভোরের সূর্য আর গোধূলীতে ভিন্ন রূপে সাজে হাওরের আকাশ।
২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক প্রকল্পের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।