ডিএমপি নিউজঃ গাজীপুরে চাঞ্চল্যকর অজ্ঞাত পুরুষের হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কাশিমপুর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- তনয় সরকার (৩১) ও আরিফা বেগম (২৪)।
২৯ মে, ২০২১ (শনিবার) দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টায় গাজীপুরের কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২১ এপ্রিল, ২০২১ (বুধবার) সকালে গাজীপুর, কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় এলাকায় একটি বাড়ীর সেফটিক ট্যাংকির মধ্যে অজ্ঞাত পুরুষের হাত, পাঁ, মাথাবিহীন লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় গত ২২ এপ্রিল, ২০২১ (বৃহস্পতিবার) কাশিমপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। এ মামলার তদন্ত শুরু করে কাশিমপুর থানা পুলিশ।
কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহবুবে খোদা জানান, উক্ত মামলা তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের শনাক্ত করে কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ এলাকায় অভিযান করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের দেখানো মতে সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় ময়লার স্তুপ হইতে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, করাত ও নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ী ময়লার ভাগাড় থেকে নিহতের খন্ডিত হাত, পা ও মাথা সহ ০৫ টুকরা দেহাংশ গলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে নিহত ব্যক্তি সুমন মোল্লা (২৮), পিতা-জাফর মোল্লা, মাতা-রেকসনা বেগম, সাং-গোলা বরননী বাজার, থানা-চিতলমারী, জেলা-বাগেরহাট মর্মে জানা যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আরিফা ভিকটিম সুমনের স্ত্রী হন। ভিকটিম ও গ্রেফতারকৃত আরিফা সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট মাওলানা শফিউল্লাহ এর বাড়ীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। গ্রেফতারকৃত আরিফা ও তনয়ের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের কারণে ভিকটিম সুমন অভিযুক্ত তনয়কে কয়েকবার মারধর করেন। এ জন্যে তারা ভিকটিম সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ১৯ এপ্রিল, ২০২১ (সোমবার) রাত সাড়ে ১০ টায় আরিফা ভিকটিম সুমনকে দুধের সাথে ঘুমের ঔষধ খাওয়ান। এরপর ভিকটিমের স্ত্রী আরিফা ফোন করে তনয়কে ডেকে আনেন। দুজনে সম্মিলিতভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় ভিকটিমকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর ঘরের মধ্যে রেখে দেয়। পরের দিন তারা চাপাতি দিয়ে ভিকটিমের পেট কাটার পরে করাত দিয়ে লাশের মাথা, দুই হাত, দুই পা বিচ্ছিন্ন করেন। নিহত সুমনের হাত, পা ও মাথাবিহীন শরীর আরিফার ব্যবহৃত কাথা দিয়ে বেঁধে পার্শ্ববর্তী বাড়ীর সেফটিক ট্যাংকিতে ফেলে দেন। ভিকটিমের দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন ০৫ টি অংশ পলিথিনের ব্যাগে মুড়িয়ে চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ী ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন।
গ্রেফতারকৃতদেরকে আজ (৩০ মে) বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।