ঘন ঘন গ্যাস-অম্বল? কিছু খেলেই পেট ভার, বুক জ্বালা? ভাবছেন বদহজম? খাচ্ছেন অ্যান্টাসিড? অবহেলা করে বিপদ ডেকে আনছেন আপনি। ক্রনিক গ্যাস-অম্বল থেকে হতে পারে পাকস্থলীর ক্যানসার। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সকাল ৯টায় ব্রেকফাস্ট করে দুপুরের খাবার খান বিকেল ৪টায়। আর রাতের খাবার তো ঘড়ির কাঁটাকে তোয়াক্কাই করেন না। কখনও রাত ১২টা তো কখনও ১টা। এমনই অস্বাস্থ্যকর ডায়েট ও লাইফস্টাইলের কারণে গ্যাস-অম্বল এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। অ্যাসিডিটির মূল কারণ খালি পেট। দিনের বেশিরভাগ সময় পেট খালি থাকলে পাকস্থলীতে উপস্থিত অ্যাসিডগুলি খারাপ প্রভাব ফেলে। যার ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, বদহজম সহ হজমের নানা সমস্যা। ঘরে ঘরে গ্যাস, পেটের অসুখ। পানি খেলেও গলা-বুক-পেট জ্বালা, চোঁয়া ঢেকুর, পেট ভুটভাট।
এমন কোনও বাড়ি এখন খুঁজে পাওয়া মুশকিল, যেখানে অ্যান্টাসিড বা গ্যাসের ওষুধ মজুত থাকে না। অম্বল-গ্যাসে ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছি আমরা। বুক জ্বালা করলে টুক করে একটা অ্যান্টাসিড। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকলে ফের বদহজম।
এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যে পাকস্থলীর মুভমেন্ট ঠিক হয় না। ঠিকমতো মলত্যাগও হয় না। যার কারণেও অম্বল হতে পারে। মূলত বেশি ভাজাভুজি, মশলাদার খাবার খেলে হজমের সমস্যা হয়। অপরিচ্ছন্ন জায়গা থেকে খাবার খাওয়ার ফলেও তা হতে পারে। অনেক সময় খাদ্যনালি, পাকস্থলীতে সমস্যা থাকলেও অম্বল হয়। হাঁটাচলা না করলেও হজমের সমস্যা হয়।
অ্যান্টাসিড বা গ্যাসের ওষুধে সাময়িক স্বস্তি মেলে। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে ফেলে রাখলে দীর্ঘস্থায়ী বিপদের আশঙ্কা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ক্রনিক গ্যাস-অম্বল থেকে পাকস্থলীর ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে পাকস্থলীর ক্যানসার প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে না। এক্ষেত্রে পেটের গন্ডগোল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিদিন স্থায়ী হয়। পেটে অল্প অল্প ব্যাথা, খিদে কমতে থাকে। ওজন কমতে থাকে, শরীর শুকোতে থাকে। বমি বমি ভাব, পরে টক বমি, হেঁচকি, রক্তবমি, রক্ত পায়খানা।
গ্যাস-অম্বলকে তাই অবহেলা করা যাবে না মোটেই। চিকিত্সকের পরামর্শ না নিয়ে দিনের পর দিন গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টাসিড খেতে থাকলে মারাত্মক বিপদ।
প্রতিরোধের উপায় কী?
চিকিত্সকদের পরামর্শ, বেশি তৈলাক্ত খাবার, ভাজাভুজি, বাসি-পচা খাবার, খুব বেশি খাবার, অত্যধিক চা-কফি, ধূমপান, জর্দা-তামাক, সুপারি খাওয়া ছাড়তেই হবে। ঠিক সময়ে খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম মাস্ট। বদল আনতেই হবে লাইফস্টাইলে।