চিকিৎসকদের মতে সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলেসিস এমন ধরনেরই ঘাড়ে ব্যথার রোগ। যার ফলে ঘাড়ে যেমন ব্যথা হয়, তেমনি মাথার নিম্নাংশেও ব্যথা হয়ে থাকে। মাঝেমধ্যে এই ব্যথা দুই কাঁধ, বাহু, হাত এমনকি আঙুলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারও কারও আবার মাথাব্যথা, পিঠের পেছনে ব্যথা, হাত/বাহু দুর্বল বা অবশ হয়ে আসা বা চিনচিনে ব্যথা করা- এসব উপসর্গও দেখা দিতে পারে।
সার্ভিক্যাল স্পন্ডাইলেসিসে ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
আমাদের ঘাড়কে কষ্ট করে যে হাড়গুলো শক্ত করে রাখে তাদের নাম কশেরুকা বা ভারটেব্রা। পাশাপাশি মাংসপেশিও অনেকটা ভার বহন করে। আর এই কশেরুকার মাঝের স্বাভাবিক ফাঁকগুলো যখন কমে আসে, তখনই শুরু হয় ঘাড়ে ব্যথা। কারণ, এই ফাঁকগুলো দিয়ে বের হয় আপনার স্নায়ু, আর হাড়ের ফাঁক কমে গেলে এই নার্ভের ওপর চাপ পড়ে এবং এসব নার্ভ যেসব জায়গায় অনুভূতি বহন করে সেসব জায়গা ব্যথাময় হয়ে ওঠে।
এ রোগ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তিনি পরীক্ষা করে সহজেই এই রোগ নিশ্চিত করতে পারেন। তবে রোগের বিস্তৃতি এবং কারণ নির্ণয়ে ঘাড়ের এক্স-রে এবং অনেক সময় এমআরআই পরীক্ষা করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। ঘাড়ের বিশ্রাম নেওয়া এ রোগের প্রধান চিকিৎসা, সে সঙ্গে ব্যথার ওষুধ সেবন, সেঁক নেওয়া, কখনও কখনও গলায় শক্ত কলার ব্যবহার এবং সেই সঙ্গে ফিজিওথেরাপি নিলে এ রোগ থেকে নিস্তার মেলে।
তবে অনেক সময় ব্যথার তীব্রতা বেশি হলে এবং ওষুধে তা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সার্জারি বা অপারেশনই এর একমাত্র চিকিৎসা হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য শুরুতেই এ রোগের চিকিৎসা করিয়ে নেওয়া উত্তম। যেহেতু নির্দিষ্ট পেশাজীবীদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ অনেক বেশি, তাই এ রোগের ঝুঁকিতে থাকা পেশাজীবীদের অবশ্যই কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঘাড়ের বিশ্রাম নেওয়া উচিত এবং ধীরে ধীরে ঘাড় চারপাশে ঘুরিয়ে দৈনিক নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।