কদমতলীতে চুরি করতে গিয়ে ধর্ষণ অতঃপর হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে কদমতলী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হল- জামাল খান পাটোয়ারী(২৮) ও রাজীব হাওলাদার(২২)।
উল্লেখ্য, ১৮ জুন ১৭ কদমতলীর পূর্বজুরাইনের নামা শ্যামপুর এর ৪র্থ তলার একটি বাসা থেকে পারুল বেগম (৩২) নামের এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। মৃতার ভাই মোঃ নয়ন খান পরেরদিন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করে তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্তে নামে কদমতলী থানা পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত বিশ্লেষন করে গত ১৯ জুলাই, ১৭ দিবাগত রাতে সাভার, ফতুল্লা ও ডেমরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে। এসময় মৃতা পারুল বেগমের খোয়া যাওয়া স্যামসং মোবাইল ফোনটি আসামী জামালের হেফাজত হতে উদ্ধার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ফরিদ উদ্দীন আহমেদ জানান, গ্রেফতারকৃত জামাল ও রাজীব পরস্পর বন্ধু। ইতোপূর্বে রাজীব হাওলাদার ভিকটিম পারুল বেগমের সাথে একটি কীটনাশক ঔষধ কোম্পানীতে চাকুরী করায় পূর্ব পরিচিত।
ভিকটিম পারুল বেগমের স্বামী গাড়ী চালক লিটন প্রায়ই সময় বাড়ির বাইরে থাকার বিষয়টি রাজীব জানতো। ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে জামাল ও রাজীব ভিকটিম পারুল বেগমের বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র টাকা পয়সা জোরপূর্বক নিয়ে যাবে বলে পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৮ জুন ইফতারের পর রাজীব পারুল বেগমকে ফোন করে তার বাসায় বেড়াতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। রাজীবের সাথে পূর্ব পরিচয়ের কারনে তারা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে কিছু আম, পেয়ারা, হালিম ও দুইটি স্পীড (পানীয়) এর বোতল কিনে। বোতল ও হালিমের মধ্যে ঘুমের ঔষধের গুড়া মিশিয়ে নেয়।
অতঃপর ঘটনাস্থল বাসায় কৌশলে গল্পের ফাঁকে পারুল বেগমকে স্প্রীড আর হালিম খাওয়ায়। কিছু সময়ের মধ্যে পারুল বেগম ঘুমে ঢলে পড়লে প্রথমে রাজীব তাকে ধর্ষণ করার পর জামালও তাকে ধর্ষণ করে। ভিকটিম পারুল ঘুমের মধ্যে একটু আওয়াজ করলে জামাল তার গলা চেপে ধরে ও রাজীবও তার মুখ চেপে ধরে।
ভিকটিম পারুল কিছুটা নিস্তেজ হলে আসামীরা পারুলের মুখ ও হাত বেধে ফেলে। পারুলের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর তারা বাসা থেকে পারুলের ব্যবহৃত স্যামসং মোবাইল ফোন, একটি স্বর্ণের নাকফুল ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।