ডিএমপি নিউজঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলায় অভিযান চালিয়ে ০৮টি চোরাই গাড়িসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ,গাড়ী চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম।
গ্রেফতারকৃতদের নাম- ১। নূরুল হক, ২। আব্দুল আলিম ওরফে ইমন, ৩। মোঃ হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান ও ৪। এ এইচ রুবেল। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে ৮ টি চোরাইকৃত প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজধানীর কাফরুল থানা, গুলশান থানাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় গাড়ি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। রাজধানীর মিরপুর বিআরটিএ অফিসের রাস্তার বিপরীত পাশে থাকা একটি প্রাইভেট কার চুরির ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ কাফরুল থানায় মামলা হয়। পরবর্তী সময়ে গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম উক্ত মামলার তদন্ত শুরু করে।
সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ,গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আশারাফুল ইসলাম ডিএমপি নিউজকে জনান, ঘটনাস্থল হতে সংগৃহীত সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এই চক্রের সদস্যদের সনাক্ত করা হয়। গত ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে চোরাই প্রাইভেটকারসহ নূরুল হক (২৪) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের দেওয়া তথ্য মতে ১২ মার্চ, ২০২১ তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানা এলাকা হতে ০১ টি চোরাই প্রাইভেটকার ও ০১ টি মাইক্রোবাসসহ আব্দুল আলিম ওরফে ইমন (৩৩) কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৬ মার্চ, ২০২১ তারিখে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানা এলাকা থেকে মোঃ হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান (২৯) ও এ এইচ রুবেল (৩৭) কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ০৫ টি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কৌশল সম্পর্কে তিনি আরো জানান, এ চক্রের সদস্যরা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গাড়ি চুরির সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এ চক্রের ০২/০৩ জনের একটি গ্রুপ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টার্গেট গাড়ি খুঁজতে থাকে। টার্গেটকৃত গাড়ি পেলে সময় ও সুযোগ বুঝে কয়েক মূহুর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ছুটে যায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, পূর্বাচল বা কাচঁপুর ব্রীজের দিকে। সামনে ও পেছনে বাইক বা অন্য কোন গাড়িতে থাকে এ চক্রের বাকি সদস্যরা। সেখান থেকে তাদের একজন দক্ষ ড্রাইভার গাড়িটি পৌঁছে দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ বা মৌলভীবাজারের চোরাই গাড়ি বিক্রির সিন্ডিকেটের নিকট। সেখান থেকে অন্য ড্রাইভার দ্বারা গাড়িটি চলে যায় সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায়। বিআরটিএ এর সীল স্বাক্ষর জাল করে গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি করা হয়। মূল মালিকের নামের সাথে মিল রেখে তৈরি করা হয় নকল দলিল অথবা বিজ্ঞ আদালতের সই স্বাক্ষর সম্বলিত নিলামের নকল কাগজপত্র। সহজ সরল লোকদের ভুলিয়ে ভালিয়ে তাদের নিকট অনেকটা কম মূল্যে গাড়িটি বিক্রি করে দেয়।এ চক্রের সদস্যরা কিছু কিছু গাড়ি দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিল ও গাঁজা বহন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের চোরাকারবার পরিচালনা করে গড়ে তোলে অপরাধের বিশাল সম্রাজ্য।
গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।