জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে ফের নির্বাচিত হয়েছে ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য দেশগুলো দুই বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত করা হয়। নতুন সদস্যদের মেয়াদ শুরু হবে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে।
এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলো ভারত। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে ১৯২টি ভোটের মধ্যে ১৮৪টি ভোট পেয়ে এবার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয় দেশটি। বুধবার ২০২১-২০২২ সময়ের জন্য অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত অপর তিন দেশ হলো- মেক্সিকো, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড।
এদিকে নিরাপত্তা পরিষদে এই সদস্যপদ পাওয়ার লড়াইয়ে ফের হেরে গেছে কানাডা। আর আফ্রিকা অঞ্চল থেকে অস্থায়ী সদস্য নির্বাচনের লড়াই গড়িয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ডে। কেননা এই লড়াইয়ে থাকা জিবুতি ও কেনিয়ার উভয়ই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দেশ দুটির মধ্যে ফের ভোটাভুটি হবে।
পনেরো সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পাঁচটি- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। তাদের আছে ভেটো প্রধানের ক্ষমতা।
বাকি দশটি আসন রয়েছে অস্থায়ী সদস্য দেশগুলির জন্য। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দেশগুলোকে দুই বছরের অস্থায়ী সদস্যপদ দেওয়ার জন্য প্রতি বছর নির্বাচন হয় জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে।
সাধারণ পরিষদে ২০২০-২১ অধিবেশনের জন্য এবার সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন তুরস্কের কূটনীতিক ভালকান বসকির। এ পদে তিনিই একমাত্র প্রার্থী ছিলেন। যদিও তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল আর্মেনিয়া, সাইপ্রাস ও গ্রিস।
এদিকে নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে অনেক প্রচারণা চালিয়েও জায়গা পেতে ব্যর্থ হয়েছে কানাডা। এই ব্যর্থতা প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোটাভুটিতে কানাডাকে কোনো রকমে হারিয়ে ইউরোপ ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে সদস্যপদ পেয়ে যায় নরওয়ে (১৩০) ও আয়ারল্যান্ড (১২৮)। এর আগে ২০১০ সালেও অস্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার লড়াইয়ে পর্তুগালের কাছে হেরে গিয়েছিল কানাডা।
লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবার সদস্যপদ পেয়েছে মেক্সিকো। ২০০৯-১০ সময়ের পর ফের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট এই কাউন্সিলের সদস্য হলো মধ্য দেশটি।
উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদের ১০টি অস্থায়ী সদস্য দেশকে ভোটাভুটির মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় পাঁচটি এলাকা থেকে। আফ্রিকা ও এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপসহ অন্যান্য দেশ।
আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে বেছে নেওয়া হয় সর্বাধিক পাঁচটি দেশ, পূর্ব ইউরোপ থেকে একটি, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্রগুলোর এলাকা থেকে দুটি। আর পশ্চিম ইউরোপসহ অন্যান্য দেশ থেকে নেওয়া হয় দুটি।