এফডিসি প্রাঙ্গণে চলচ্চিত্রের নায়ক নায়িকাদের ঝলমলে উপস্থিতি উজ্জ্বল করে তুলেছিল চলচ্চিত্র দিবসের অনুষ্ঠান। নায়করাজ রাজ্জাক, অঞ্জনা, নূতন, মৌসুমী, পূর্ণিমা, ওমর সানী, অমিত হাসান, প্রিয়া, পরীমনি, সায়মন-মাহিরা আলো ছড়িয়েছে এফডিসি প্রাঙ্গণে। আর এফডিসির বাইরে ছিল হাজার হাজার ভক্তের ভিড়। জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে ছিল দিনভর আনন্দ আয়োজন। এছাড়াও চলচ্চিত্র দিবসের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। সেখানেও ছিল চলচ্চিত্র বিষয়ক আলোচনা সভা, চলচ্চিত্রের পোস্টার প্রদর্শনী ও চলচ্চিত্র গানের অনুষ্ঠান। দেখানো হয় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘আমাদের চলচ্চিত্রকে ভালোবাসুন/ প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখুন’।
ছিল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। দেশীয় বাদ্যের তালে তালে বিএফডিসি থেকে যাত্রা শুরু করে সোনারগাঁও হোটেল হয়ে আবার বিএফডিসিতে গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি, চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতি ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ঘিরে নানা সাজে সাজানো হয়েছে এফডিসিকে। এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব প্রেক্ষাগৃহে ছিল চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ফিল্ম আর্কাইভের উদ্যোগে বাংলাদেশের বিখ্যাত সিনেমার পোস্টার-ব্যানার দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো এফডিসি চত্বর। প্রবেশদ্বার থেকে এফডিসির ভেতর সাজানো হয় সিনেমার পোস্টার দিয়ে। এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছিল চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রের প্রদর্শনী। ৮নং ফ্লোরে ছিল সেমিনার ও টকশো। ডিজিটাল কমপ্লেক্সের সামনে মূল মঞ্চে ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গানের সঙ্গে পারফর্মেন্সে অংশ নেন প্রবীণ-নবীন শিল্পীরা। সায়মন-মাহি পরিবেশন করেন পোড়ামন চলচ্চিত্রের গান ‘জ্বলে জ্বলে জোনাকি দিয়ে যায় আলো, পরীমনি ‘রক্ত’ চলচ্চিত্রের ‘আমি ডানাকাটা পরী’। ওমর সানী ও প্রিয়া ‘হূদয়ের কথা’ চলচ্চিত্রের গান ‘হূদয়ের কথা’, নিরব-আইরিন’ পরিবেশন করেন ‘এই তো ভালোবাসা’ চলচ্চিত্রের গান ‘তুমি আমার না বলা ভালোবাসা’। অন্যান্য আয়োজনের অংশ নেন জায়েদ খান, অমিত হাসান, মৌসুমী, পূর্ণিমা, কাজী মারুফ, মিষ্টি জান্নাত, বিপাশা কবির, অঞ্জনা, নূতনসহ অনেকে। সঙ্গীত পরিবেশন করেন এসআই টুটুল, আসিফ আকবর, কনা, আরেফিন রুমীসহ আরও অনেকে। আতশবাজির মাধ্যেমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
এর আগে, এফডিসিতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ এমপি, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি নায়করাজ রাজ্জাক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানসহ আরও অনেকে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এফডিসি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু চলচ্চিত্র জগতে যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন, তা বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনাকে বেগবান করেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালিদের প্রেরণা যুগিয়েছে।
এছাড়া, শিল্পকলা একাডেমিতে ছিল নানা আয়োজন। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ্ কবরী। সভাপতিত্ব করেন মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন রুমানা ইসলাম, মামুন জাহিদ খান, চন্দনা মজুমদার, অনুপমা মুক্তি ও ঢাকা সাংস্কৃতিক দলের শিল্পীবৃন্দ। নৃত্য পরিবেশন করেন স্পন্দন, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস।