যাত্রা শুরু হলো বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অনলাইন-ভিত্তিক ভার্চুয়াল গ্যালারি’র। গতকাল বিকেলে থেকে এই আনুষ্ঠানিকভাবে এই গ্যালারি’র যাত্রা শুরু হয়। যার ফলে এখন থেকে অনলাইনেই জাদুঘরের ওযেব সাইটে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে জাদুঘরের নানান শিল্পকর্ম ও নির্দশন। বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে জাতীয় জাদুঘরের ভার্চুয়াল গ্যালারি দেখতে লগইন করতে হবে www.bangladeshmuseum.gov.bd/vt/ এই ঠিকানায়। এর পর ভিতরে প্রবেশ করে ৩৬০ ডিগ্রি এঙ্গেলে জাদুঘরের ভেতরকার নিদর্শনগুলো দেখা যাবে। প্রাথমিকভাবে এই ভার্চুয়াল গ্যালারিতে প্রদর্শনের জন্য স্থান পেয়েছে প্রায়া তিন হাজার শিল্পকর্ম ও নিদর্শন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় পরিচালিত ‘অ্যাকসেস ২ ইনফরমেশন (এ২আই) প্রকল্পের সমর্থনে এবং জাতীয় জাদুঘরের পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ‘ভার্চুয়াল গ্যালারি’ নির্মিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে গতকাল বিকেলে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় প্রবর্তন অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই- ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক এবং এ২আই-এর প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত ভাষণ দেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কম্পিউটারাইজেশন এবং ডিজিটালাইজেশনের কাজ করে যাচ্ছে। এইসব কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে আধুনিক প্রযুক্তিতে ‘ভার্চুয়াল গ্যালারি’ নির্মাণ করে তা জাদুঘরের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত করা হলো।
এসময় ফয়জুল লতিফ চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় পরিচালিত অ্যাকসেস্ ২ ইনফরমেশন প্রকল্প বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ‘ভার্চুয়াল গ্যালারি’ নির্মাণে প্রয়োজনীয় সমর্থন দিয়েছে এবং সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড থেকে অর্থায়ন করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির ভাষণে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিষয়ক তথ্যসেবা অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আধুনিক বিশ^মানের জাদুঘরের যাত্রায় একধাপ এগিয়ে গেল। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই স্থায়ী প্রদর্শনীর অমূল্য নিদর্শনসমূহ খুব সহজে দিগন্ত পাড়ি দিয়ে দেশি-বিদেশি দর্শকগণকে আকৃষ্ট করবে এবং পরবর্তীতে সরেজমিনে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ভ্রমণে আগ্রহী করে তুলবে।
প্রধান অতিথির ভাষণে ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম বলেন, প্রযুক্তিতে আমরা খুব একটা পিছিয়ে নেই। ইউরোপের অনেক দেশে অল্প দিন আগে ভার্চুয়াল গ্যালারি তৈরি হয়েছে। এই ভার্চুয়াল গ্যালারি বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাস ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কিত তথ্যাদি দেশি-বিদেশি জনগণের কাছে অনলাইনে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে অসাধারণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, জাদুঘরের এই নতুন সংযোজন সামাজিক টেকসই উন্নয়নে নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। আশা করি, এই ভার্চুয়াল গ্যালারি’র সেবার মান উত্তরোত্তর আরও তথ্য-নির্ভর ও আকর্ষণীয়ভাবে হালনাগাদ করে দেশি-বিদেশী জনগণের কাছে দেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরবে।
সভাপতির ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আজ এক নতুন মাইল ফলক নির্মাণ করল।