ডিএমপি নিউজ: আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ হস্তান্তর নিয়ে কাল রাতে জামায়াত শিবির রাজধানীর শাহবাগ ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে যে তাণ্ডব চালিয়েছে সেজন্য সাঈদীর গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেওয়া হবে না বললেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম-বার, পিপিএম।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০:৩০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু এবং পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা যাওয়ার পর তার দুই ছেলে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। তারা জেল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পোস্টমর্টেম ছাড়া লাশ পিরোজপুরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পায়। সে অনুযায়ী তারা লাশ পিরোজপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি নিলে জামায়াতের কয়েক হাজার নেতাকর্মী শাহবাগ ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে একত্রিত হয়ে জানাজা পড়ার পরে লাশ নিয়ে যাওয়ার দাবি তোলে। পরের দিন শোক দিবসে বিভিন্ন প্রোগ্রাম থাকার কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে রাতে জানাজা পড়ার অনুমতি দেয়া হয়। রাত দুইটার দিকে তারা জানাজার পরিবর্তে মুনাজাত করে এবং পরে গায়েবানা জানাজা পড়ে নেওয়ার কথা জানায়। মুনাজাত শেষে লাশ যখন পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য বের করা হয় তখন হাজার হাজার নেতাকর্মী লাশবাহী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে। তারা কোন মতেই এই লাশ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে দিবে না। তারা তখন লাশবাহী গাড়ির সাথে থাকা পুলিশ সদস্যদের উপর আক্রমণ করে তাদের গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। তাদের হামলায় ডিসি রমনা, ডিসি প্রটেকশন ও পুলিশের সিনিয়র অফিসারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ হামলায় পুলিশের ৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও ২টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ অসীম ধৈর্য সহকারে কোন শক্তি প্রয়োগ না করে তাদের এই তাণ্ডব সহ্য করে লাশ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। ফজরের নামাজের পর তাদেরকে আবারো জানাজার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ফজরের নামাজের পর তারা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে প্রাঙ্গণ দখল করে নেয় এবং লাশ পিরোজপুরে নিতে বাধা দেয়। সারা বাংলাদেশ হতে জামায়াত শিবির ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যতো সমর্থক আছে সকলকে শাহবাগে একত্রিত হওয়ার জন্য তারা ফেসবুকে প্রচার শুরু করে। তখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় পুলিশ বাধ্য হয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস মুক্ত করে লাশ পিরোজপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি ছিলো তাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে পুলিশ প্রথম থেকে হাসপাতালে শক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত ছিলো। কিন্তু তাদের তাণ্ডবের এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে পুলিশ সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করে।