ফেসবুক বা টুইটারের মতো অনলাইন জায়ান্টদের বিরুদ্ধে ৫০ মিলিয়ন ইউরো বা ৪৩০ কোটি টাকা অবধি জরিমানার বিধান রেখে একটি খসড়া আইন অনুমোদন করেছে জার্মানির মন্ত্রিসভা। ‘হেট স্পিচ’ প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে এই জরিমানা করা যাবে।
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মন্ত্রিসভা বুধবার এ আইনের খসড়া অনুমোদন করে। এতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো অনলাইনে ‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণা ছড়ানোর মতো কোনও বক্তব্য এবং ভুয়া খবর বা এমন কিছু প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে, তাদের ৫০ মিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। শুধু তাই নয়, এসব প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদেরও পাঁচ মিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। ‘হেট স্পিচ’ এবং ভুয়া সংবাদ জার্মান আইনের পরিপন্থী।
জার্মান মন্ত্রিসভা থেকে বলা হয়েছে, যেসব ‘হেট ক্রাইম’ কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা হয় না এবং বিচার করা হয় না; সেগুলো মুক্ত, অবাধ এবং গণতান্ত্রিক সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথে বড় হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। খসড়া আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য শিগগিরই পার্লামেন্টে তুলবেন জার্মান আইনমন্ত্রী হাইকো মাস।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল নামলে অনলাইনে বিদেশিদের প্রতি ঘৃণাবাচক হেট স্পিচের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। বিষয়টি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছালে জার্মান সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে এসব প্রতিরোধে আরও উদ্যোগী হবার আহ্বান জানায়। কিন্তু জার্মান সরকার এক পর্যায়ে বুঝতে পারে বেআইনি কনটেন্ট মুছে ফেলতে যথেষ্ট তৎপরতা দেখাচ্ছে না ফেসবুক এবং টুইটারের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। ফলে এবার অত্যন্ত বড় অঙ্কের জরিমানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
শুধু হেট স্পিচ বা ভুয়া খবরই নয়, খসড়া আইনে শিশু পর্নোগ্রাফি এবং সন্ত্রাসী তৎপরতা সম্পৃক্ত কন্টেন্ট মুছে ফেলার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জার্মান আইন অমান্য করে এমন কন্টেন্ট মুছে ফেলতে ব্যবহারকারীরা ‘রিপোর্ট’ করার পর সর্বোচ্চ চব্বিশ ঘণ্টা সময় পাবে ফেসবুক ও টুইটার। অন্যান্য আপত্তিকর কন্টেন্ট মুছে ফেলার ক্ষেত্রে এই সময়সীমা সর্বোচ্চ সাত দিন।
আপত্তিকর কনটেন্ট সম্পর্কে অভিযোগ করার প্রক্রিয়াও আরও সহজ করতে মিডিয়া গ্রুপগুলোকে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে, ‘অনলাইনে আলোচনায় বর্তমানে এক বিশাল পরিবর্তন ঘটছে’ বলেই এক্ষেত্রে উদ্যোগ নিতে হচ্ছে।
খসড়া আইনটি পার্লামেন্টের চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা, সেখানে ম্যার্কেলের জোট সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।