অস্ট্রেলিয়া পারেনি, ভারত পারেনি, পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপানো দল। শ্রীলঙ্কার মাটিতে ৩০০ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হারটাই ছিল সব দলের নিয়তি। ইতিহাসের পাতা থেকে এই অক্ষমতা বড় বড় দলগুলো দূর করতে পারেনি যেখানে, সেখানে জিম্বাবুয়ের মতো দল কি আর পারবে!
গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার ৩১৬ রানের পর এমনটা মনে হওয়াই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু হিসাবের খাতা উল্টিয়ে ইতিহাস নতুন করে লিখল জিম্বাবুয়ে। লঙ্কানদের ছুড়ে দেওয়া লক্ষ্যটা ১৪ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে ৬ উইকেটে। সলোমন মিরের সেঞ্চুরির সঙ্গে শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজার হাফসেঞ্চুরিতে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় পায় জিম্বাবুয়ে।
মিরের ১১২ রান সঠিক পথে রাখে জিম্বাবুয়েকে, ৬৫ রানের ইনিংস খেলে উইলিয়ামস স্বপ্ন দেখান জয়ের, আর সিকান্দারের হার না মানা ৬৭ রানের ইনিংস অনন্য এক জয় এনে দেয় সফরকারীদের। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার মাটিতে এটা শুধু জিম্বাবুয়ের প্রথম জয় বলে নয়, দ্বীপ দেশটিতে তারাই প্রথম দল হিসেবে ওয়ানডেতে ৩০০ ছাড়ানো লক্ষ্য পেরিয়ে গেল।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া শ্রীলঙ্কা তিন হাফসেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে করে ৩১৬ রান। ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা ৭৭ বলে করেন ৬০ রান, তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিস তাকে পেরিয়ে ৮০ বলে খেলেন ৮৬ রানের ইনিংস। হাফসেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকা উপুল থারাঙ্গার ব্যাট থেকে আসে ৭৯ রান।
দারুণ ব্যাটিংয়ের পরও হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। এ জন্য বাজে ফিল্ডিংকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেই পারে স্বাগতিকরা। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া মির ৯৬ বলে ১১২ রানের ইনিংস খেলার পথে জীবন পেয়েছেন দুইবার- ১৭ ও ৯৪ রানে। প্রথম ক্যাচটি উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকবিলার জন্য কঠিন হলেও দ্বিতীয়টিতে সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন লাসিথ মালিঙ্গা। ৬৫ রান করা উইলিয়ামসও জীবন পেয়েছিলেন ১৩ রানে। পয়েন্টে গুনাথিলাকা ক্যাচটি ধরতে পারলে উইলিয়ামস ও মিরের জুটি আটকে দিতে পারতো ৩৭ রানে। তৃতীয় উইকেটে যারা শেষ পর্যন্ত ১১৩ বলে যোগ করেন ১৬১ রান।
তাই বলে খাটো করে দেখার কোনও সুযোগ নেই জিম্বাবুয়ের অনন্য এই জয়কে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নতুন এক জিম্বাবুয়েকেই পাওয়া গেছে খুঁজে। সেই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় নতুন একটা অধ্যায় খুলে রাখল দ্বীপ দেশে প্রথম দল হিসেবে ওয়ানডেতে ৩০০ ছাড়ানো স্কোর পেরিয়ে।