কক্সবাজারের উখিয়া ও বরিশালে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে জাটকা ও মা ইলিশ। দীর্ঘ ২২ দিন নিষেধাজ্ঞার পর ২২ অক্টোবর থেকে গতকাল রবিবার সাত দিনের চিত্র প্রায় একই। বিপুল পরিমাণ জাটকা ও মা ইলিশ ধরা পড়লেও বড় ইলিশ ধরা পড়ছে কম।
বরিশালের বৃহৎ মৎস্য মোকাম পোর্ট রোডের আড়ত ও উখিয়ার সমুদ্র উপকূলের মৎস্য আড়তগুলোতে গতকাল সকালে দেখা গেল ট্রলার বোঝাই ইলিশ আসছে। যার অধিকাংশই জাটকা ও মা ইলিশ। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এসব ইলিশ বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। দাম সহনীয় হওয়ায় ক্রেতারা আগ্রহ ভরে ইলিশ ক্রয় করছেন।
আড়াইশ টাকা কেজি দরে এসব জাটকা বিক্রি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ হাট-বাজারে ভিড় করছেন। তবে এক কেজির ইলিশ দেখা মেলেনি বললেই চলে। ২২ অক্টোবরের পর ১ নভেম্বর পর্যন্ত যদি আরো ৯ দিন জাটকা ও মা ইলিশ নিধন বন্ধ থাকতো তাহলে মৌসুমে ইলিশ সংকট হওয়ার আশঙ্কা থাকত না। অবশ্য ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা রক্ষা অভিযান শুরু হচ্ছে।
উখিয়ার চোয়াংখালী গ্রামের ট্রলার মালিক আমির হামজা জানান, সাগরে প্রচুর ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ায় তারা খুশি। জেলেরা সারা রাত ইলিশ ধরে সকালে আড়তে নিয়ে আসলে মাছ দেখে খুব আনন্দ লাগে। একই উপজেলার সোনারপাড়া বাজারে ইলিশ বিক্রি করতে আসা জেলে কালা মিয়া বলেন, বর্তমানে যেসব ইলিশ ধরা পড়ছে তার প্রায় প্রতিটির পেটেই ডিম দেখা যাচ্ছে। পাঁচশ গ্রামের নিচের মাছই বেশি।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে জাটকা নিধন বন্ধ করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে মা-ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা ও জাটকা নিধনের সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন। তা হলে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে যাবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে ৪০ ভাগ মা-ইলিশ ডিম ছাড়তে পারেনি। ইলিশ মূলত একবারে শতভাগ ডিম ছাড়ে না। ছয়টি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় এরা ডিম ছাড়ে। আমরা মূলত মুখ্য একটি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি, আর এতে যে পরিমাণ ডিম ছেড়েছে ইলিশের চাহিদা তাতে পূরণ হয়ে যাবে।
উখিয়া উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান আহমদ জানান, সাগরে প্রচুর ইলিশ থাকায় মাত্র দুই-তিন দিনের মধ্যেই অনেক ইলিশ শিকার করতে পেরেছেন জেলেরা।