ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর শাহআলী থানা এলাকা থেকে ডাকাতের মাস্টার আসলামসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-ডাকাতের মাস্টার মোঃ আসলামুল হক ওরফে আসলাম, মকবুল হোসেন প্রকাশ ওরফে মঙ্গল হোসেন বাবু, মোঃ রফিকুল ইসলাম ও মোঃ হাসান হাওলাদার।
শনিবার (১১ জুন ২০২২) দিবাগত রাতে শাহআলী থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি তেজগাঁও জোনাল টিম।
গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি হাইয়েস মাইক্রোবাস, ১ টি বিদেশি পিস্তল, ১ টি লোহার তৈরি ছোরা, ২ টি লোহার তৈরি চাকু, ২ টি লাঠি, ২ টি গামছা এবং ডাকাতি করা ৩ টি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
আজ রবিবার (১২ জুন ২০২২) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার), (ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত)।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শাহআলীর বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ চার ডাকাতকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা তেজগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাদত হোসেন সুমা।
গ্রেফতারকৃতদের ডাকাতির কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, তারা মূলত লেজার লাইট দিয়ে মালবাহী ট্রাকের সামনে সিগন্যাল দেয়। ট্রাক চালক পুলিশি সিগন্যাল ভেবে ট্রাক থামালে অস্ত্রের মুখে চালক ও হেলপারকে জিম্মি করে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। পথিমধ্যে কোন এক নির্জন স্থানে তাদেরকে ফেলে দিয়ে ট্রাকে থাকা ধান, চাল, গরু, মাছের খাবার ইত্যাদি ডাকাতি করে থাকে। এরপর ডাকাতি করা ওই ট্রাকটি নিয়ে আবার অন্য কোথাও ডাকাতি করে। গ্রেফতারের দিনও তারা বেড়িবাঁধ এলাকায় চালবাহী ট্রাকে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে সমবেত হয়েছিল বলে স্বীকার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এদের দলনেতা বর্তমান সময়ের মোস্ট ওয়ান্টেড ডাকাত আসলামুল হক ওরফে আসলাম। তাকে দলের অন্য ডাকাতরা মাস্টার নামে ডাকে। আসলামের নেতৃত্বে তারা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও যশোর এলাকায় ডাকাতি করেছে।
তিনি বলেন, করোনাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে প্রথমে ৪০ এরপর ১৬ আর আজ চারজনকে নিয়ে ৬০ জনের সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ। তারা গ্রেফতার হচ্ছেন, জেলে যাচ্ছেন আবার বের হয়ে একই কাজে লিপ্ত হচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
যেখানে যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, সে ঘটনাগুলো থানা পুলিশ বা ডিবিকে জানানোর অনুরোধ করেন পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির শাহআলী থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে বলে যোগ করেন তিনি।
গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম, বিপিএম এর নির্দেশে, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম এর তত্ত্বাবধানে, তেজগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাদত হোসেন সুমা, বিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।