বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি বলেছেন, “তাঁতী সমাজকে পুর্নবাসন করে তাদের সমৃদ্ধ করা হবে যার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হয় । দেশে তাঁত বস্ত্রের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে তাঁতীদের আয় বৃদ্ধি করে দারিদ্র্য প্রান্তিক তাঁতীদের আত্ম-কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করছে সরকার ।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বিশ্বখ্যাত ‘মসলিন’ কাপড় তৈরীর প্রযুক্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডে কর্তৃক ১২.১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর পাশে মাদারিপুর জেলার শিবচরে ১০০ একর জমির উপর তাঁতপল্লী স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার । ”
বুধবার সকালে জাতীয় গ্রন্থাগারে শওকত ওসমান মিলনায়তন এ বাংলাদেশ তাঁতী লীগ এর উদ্যোগে তাঁত শিল্পের “অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত”শীর্ষক সেমিনার-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সভায় তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন আহম্মেদ (অতিরিক্ত সচিব), তাঁত বোর্ডের সদস্য নিমাই চন্দ্র(যুগ্মসচিব) বাংলাদেশ তাঁতী লীগের সভাপতি জনাব ইঞ্জিঃ মোঃ শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নেছার উদ্দিনসহ তাঁতী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন । সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিটি ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. ফজলেহ আলী।
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ তাঁতী লীগের বর্তমান কমিটিকে অভিন্দন জানান। বাংলাদেশের তাঁত শিল্পের বিকাশ ওবর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে তাঁতীলীগের সহযোগিতা কামনা করেন।
সেমিনারে জানানো হয়, ৫০১৫.৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে “তাঁতিদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিতরণকৃত টাকার অর্জিত সুদ হইতে ঘূর্ণায়মান তহবিল হিসাবে ঋণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় আগস্ট ২০১৭ পর্যন্ত ৪২,৮৬৭ জন তাঁতিকে ৬১,৩৬৯ টি তাঁতের অনুকূলে ৭০৩২.০৯ লক্ষ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাজারের চাহিদা এবং ভোক্তার পছন্দ অনুযায়ী নতুন নতুন ডিজাইন উদ্ভাবন, উদ্ভাবিত নতুন ডিজাইনের উপর তাঁতিদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘তাঁত বস্ত্রের উন্নয়নে ফ্যাশন ডিজাইন, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং ১টি বেসিক সেন্টার স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি জুন ২০১৭ মাসে সমাপ্ত হয়েছে।
তাঁত বোর্ডের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে সেমিনারে জনানো হয় , বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডে কর্তৃক প্রণয়নকৃত প্রকল্পসমূহ অনুমোদন ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে তাঁত বস্ত্রের উৎপাদন বছরে ৬৮ কোটি মিটার (বিবিএস) হতে বৃদ্ধি পেয়ে ১০০ কোটি মিটারে উন্নীত হবে। ফলে উৎপাদিত তাঁত বস্ত্র দ্বারা দেশের বর্তমান অভ্যন্তরীণ বস্ত্র চাহিদাপূরণ শতকরা ৪০ ভাগ হতে ৫৫ ভাগ এ উন্নীত হবে।
এছাড়া, তাঁত বস্ত্রের রপ্তানী হতে বছরে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁত বস্ত্রের মূল্য সংযোজনের পরিমাণ বছরে ১২২৭ কোটি টাকা হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত হবে। ফলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।