বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ তুরস্কের সাথে চলমান বাণিজ্য বাড়াতে এফটিএ করতে আগ্রহী। এ বিষয়ে তুরস্কের সাথে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনাও কিছুদিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি গতকাল বুধবার ঢাকায় হোটেল লি মেরিডিয়ানে তার্কিস এক্সপোর্টার্স অ্যাসেম্বলি (টিআইএম) এবং এফবিসিসিআই আয়োজিত “তার্কি-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম এন্ড বি-টু-বি মিটিং প্রোগ্রামে” প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রৃদূত ডেভরিম অজতুক। অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে সফররত তার্কিস এক্সপোর্টার্স অ্যাসেম্বলির মেম্বার অফ সেক্টর কাউন্সিল বাসরা বাইরাক,এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং এফবিসিসিআই’র প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন,২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাংলাদেশ তুরস্কে রপ্তানি করেছে ৬৩১ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ২১২ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। তুরস্কের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তুরস্ক ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সদস্য নয় বলে সেখানে বাংলাদেশ ডিউটি ও কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা পায় না। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক, ওষুধ, হিমায়িত মাছ, শুকনা খাবার, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া, প্লাস্টিক পণ্য, সিরামিক পণ্য, তৈরী জাহাজ, হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে তুরস্কে। উচ্চ শুল্কহারের কারণে বাংলাদেশ আশানুরূপ পণ্য তুরস্কে রপ্তানি করতে পারছে না।। তিনি বলেন, তুরস্কের সাথে এফটিএ হলে বাংলাদেশ তুরস্কের কাছে এ বাণিজ্য সুবিধা পাবে। তখন তুরস্কে বাংলাদেশের রপ্তানি অনেক বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, তুরস্কের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সুসম্পর্ক ঐতিহাসিক। সেখানে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশে তুরস্ক বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা ও সম্ভাবনা তুলে ধরতে হবে। এতে করে তুরস্কের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। বাংলাদেশে তুরস্ক সরাসরি বিনিয়োগ করলে উভয়দেশ লাভবান হবে। এ জন্য এফবিসিসিআইকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শূন্যহাতে যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু দু’টি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সংগ্রাম করেন। একটি, বাঙ্গালি জাতির মুক্তি তথা দেশের স্বাধীনতা, অপরটি হলো দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থাৎ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বাঙ্গালীদের জন্য স্বাধীন দেশে দিয়ে গেছেন, আজ তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি তথা সোনার বাংলা গড়ে তোলার কাজ সফলতার সাথে করে যাচ্ছেন।
এমওইউ স্বাক্ষর : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে তার্কিস এক্সপোর্টার্স অ্যাসেম্বলি (টিআইএম) এবং এফবিসিসিআই’র মধ্যে বুধবার একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। হোটেল লি মেরিডিয়ানে বাণিজ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশের পক্ষে এফবিসিসিআই’র প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম এবং টিআইএম’র পক্ষে তার্কিস এক্সপোর্টার্স অ্যাসেম্বলির মেম্বার অফ সেক্টর কাউন্সিল বাসরা বাইরাক এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।