ইরাকের তেল আফার শহর প্রায় পুরোপুরি আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটমুক্ত (আইএস) করার দাবি করেছে দেশটির বাহিনী।
ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলের পর তেল আফারই ছিল আইএসের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি। কর্তৃপক্ষ বলেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা নাগাদ এই অভিযানে বিজয় অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।তেল আফার শহরে অটোমান সাম্রাজ্যের (ওসমানিয়া সালতানাত) ঐতিহাসিক একটি দুর্গ রয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রসহ দুর্গটিও নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে ইরাকি বাহিনী। তেল আফার অভিযানে ইরাকি বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল আবদুলামির ইয়ারাল্লাহ গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘তাঁরা (সেনারা) দুর্গে ইরাকের পতাকা উড়িয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, গত শনিবার তেল আফার থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে আল-আয়াদিয়েহ এলাকায়ও আইএসের সঙ্গে ইরাকি বাহিনীর লড়াই হয়েছে। কৌশলগতভাবে এই এলাকা তেল আফার ও সিরীয় সীমান্তের সংযোগ সড়কের ওপর অবস্থিত।
গত জুলাই মাসে মসুল পুনরুদ্ধার অভিযানে বিজয় অর্জনের ঘোষণা দেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি। ২০১৪ সালে এই শহরেই আইএস ‘খেলাফত’ ঘোষণা করে। এরপর গত সপ্তাহে তেল আফার পুনরুদ্ধার অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী। টানা ছয় দিনের প্রবল লড়াইয়ের পর অবশেষে শহরটি প্রায় পুরোপুরি আইএসমুক্ত করার দাবি করল দেশটির বাহিনী।ইরাকে আইএসবিরোধী অভিযানের সমন্বয়ক জয়েন্ট অপারেশন কমান্ড (জেওসি) বলেছে, তেল আফার শহরের প্রাণকেন্দ্র ও অটোমান সাম্রাজ্যের দুর্গসহ ২৯টি এলাকার ২৭টিই ইরাকি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। জেওসি আরও জানায়, তেল আফারের আয়তন ১ হাজার ১৬৫ বর্গকিলোমিটার। এর ১ হাজার ১৫৫ বর্গকিলোমিটার এলাকাই পুনরুদ্ধার করেছে ইরাকি বাহিনী।
ইরাক সফরে গিয়ে শনিবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা দেশটির জন্য ৫০ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ-সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপরই তেল আফার অভিযানের এই সাফল্যের খবর এল।স্থানীয় মিলিশিয়া বাহিনী হাশেদ আল-শাবি বাহিনীর এক যোদ্ধা আব্বাস রাধি বলেন, তেল আফার পুনরুদ্ধারে ইরাকি বাহিনী যতই অগ্রসর হয়েছে, আইএসের প্রতিরোধ ততই প্রবল হয়েছে। প্রতিরোধে অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা।