যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। ভার্জিনিয়ার শার্লোটসভিলে শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থি ও বর্ণবাদবিরোধীদের সংঘর্ষের বিষয়ে প্রেসিডেন্টের দেয়া বক্তব্যকে একান্তই নিজস্ব বলে আখ্যায়িত করেছেন টিলারসন।
এর মধ্য দিয়ে যেন বলতে চাইলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করেন না ট্রাম্প। টিলারসন বলেছেন, ‘দ্য প্রেসিডেন্ট স্পিকস ফর হিমসেল্ফ’। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট নিজে যা বোঝেন তাই বলেন। এ খবর দিয়েছে বৃটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা অনলাইন গার্ডিয়ান। এতে বলা হয়, গত ১২ই আগস্ট ভার্জিনিয়াতে শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থিদের সঙ্গে বর্ণবাদ বিরোধীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় একজন শ্বেতাঙ্গ বিক্ষোভকারী বর্ণবাদ বিরোধীদের ওপর তার গাড়ি উঠিয়ে দেয়। এতে নিহত হন একজন নারী। আহত হন অনেকে। এর কয়েকদিন পর হোয়াইট হাউজ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়া হয়।
তাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ওই সহিংসতার জন্য ‘মেনি সাইডস’কে (অনেক পক্ষ) দায়ী করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছিলেন, একপক্ষে ছিল একটি গ্রুপ। তারা ছিল খারাপ। অন্যপক্ষে ছিল আরেকটি গ্রুপ। তারা খুবই সহিংস। দু’পক্ষেই খুব খারাপ মানুষ ছিল। তিনি বলেন, ডানপন্থি যারা র্যালি বের করেছিল তারা রবার্ট ই লি’র মূর্তি সরিয়ে ফেলার প্রতিবাদ জানাতে র্যালি করেছিল। এ র্যালিতে অনেক ভাল মানুষ ছিল। এ সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন টিলারসন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, এসব বক্তব্য কি বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিনিধিত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের জন্য কঠিন হয়ে যাবে কিনা।
জবাবে রেক্স টিলারসন বলেন, আমি মনে করি এ বিষয়ে কারো সন্দেহ নেই যে, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মূল্যবোধ, সরকারের প্রতিশ্রুতি, সরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিশ্রুতি এসবকে প্রতিনিধিত্ব করে না। ফক্স নিউজের উপস্থাপক ক্রিস ওয়ালেস জানতে চান, প্রেসিডেন্টের মূল্যবোধ? জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, প্রেসিডেন্ট নিজে নিজেই নিজের মতো করে কথা বলেন। এ পর্যায়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কি প্রেসিডেন্টের থেকে ‘সেপাররেট’ করছেন কিনা নিজেকে। টিলারসন জবাবে বলেন, আমাদের মূল্যবোধ সম্পর্কে আমার মতামত তুলে ধরেছি। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমি বক্তব্য রেখেছি।
এর মধ্য দিয়ে শার্লোটসভিলের ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সমর্থন দিতে যারা অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তাদের তালিকায় যুক্ত হলেন রেক্স টিলারসন। এর আগে প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গ্যারি কোহন ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, বর্ণবাদী গ্রুপের বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে পারতো হোয়াইট হাউজ এবং সেটা করাই ছিল উত্তম। বলা উচিত ছিল, এই বিভক্তি মিটানোর জন্য হোয়াইট হাউজ সব করবে। এরপর গ্যারি কোহন পদ্যাত্যাগের কথা চিন্তা করছেন বলেও কোনো কোনো রিপোর্টে বলা হয়। ওদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন কয়েক ডজন রিপাবলিকান। ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।