তিন টেস্টের সিরিজে ১-০ এগিয়ে রয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার থেকে পুণেয় শুরু সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। পুণের একমাত্র টেস্ট তিন দিনে শেষ হয়েছিল। সেই ট্র্যাডিশান মেনে কি এ বারেও ঘূর্ণি পিচ হতে চলেছে? কেমন হতে পারে ভারতের প্রথম এগারো? উইনিং কম্বিনেশন কি ভাঙতে পারে টিম ইন্ডিয়া? খেলানো হতে পারে বাড়তি স্পিনার? দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে।
মায়াঙ্ক আগারওয়ালঃ ঘরের মাঠে প্রথম টেস্টেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ২১৫ রানের ইনিংস মুগ্ধ করেছে বিশেষজ্ঞদের। প্রথম ইনিংসে রোহিত শর্মার সঙ্গে ৩১৭ রানের জুটিও গড়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্টে প্রথম শতরান, সেটাও আবার দ্বিশতরান। প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিলেন মায়াঙ্ক।
রোহিত শর্মাঃ টেস্টে ওপেনার হিসেবে সাফল্য পাবেন কি না, তা নিয়ে চলছিল তুমুল চর্চা। তবে সেই সব কিছুকেই থামিয়ে দিয়েছেন তিনি। টেস্টে ওপেনার হিসেবে প্রথমবার নেমেই ১৭৬। দ্বিতীয় ইনিংসেও চাপের মধ্যে ১২৭। লাল বলের ক্রিকেটেও ওপেনার রোহিত সুপারহিট।
চেতেশ্বর পূজারাঃ বিশাখাপত্তনমে প্রথম ইনিংসে মাত্র ছয় রানে ফিরে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও গোড়ার দিকে স্বস্তিতে ছিলেন না। দিয়েছিলেন সুযোগও। কিন্তু তারপরই ফিরে পান ছন্দ। ৮১ রানের ইনিংসে রোহিতের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ১৬৯ রান।
বিরাট কোহলিঃ বিশাখাপত্তনমে প্রথম ইনিংসে করেন ২০। দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত রানের খোঁজে নেমে ২৫ বলে অপরাজিত থাকেন ৩১ রানে। টেস্টে তাঁর ব্যাটে তিন অঙ্কের রান শেষবার এসেছে গত বছরের ডিসেম্বরে পার্থে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। পুণেয় কি বড় রান পাবেন ভারত অধিনায়ক?
অজিঙ্ক রাহানেঃ প্রথম টেস্টে করেন ১৫ ও নট আউট ২৭। ছন্দেই আছেন। যদিও লম্বা খেলতে পারেননি প্রথম ইনিংসে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে পরিস্থিতির দাবি মেনে দ্রুত রান তুলেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাফল্য পেয়েছিলেন। ফলে মিডল অর্ডারে তাঁর জায়গা পাকা।
হনুমা বিহারীঃ ক্যারিবিয়ান সফরে ছয় নম্বরে নিজের দাবি নিশ্চিত করেছেন হনুমা বিহারীও। সিরিজের সেরাও হয়েছিলেন। বিশাখাপত্তনমে তাঁর অবশ্য বিশেষ কিছু করার ছিল না। প্রথম ইনিংসে যখন ক্রিজে গিয়েছিলেন, তখন স্কোর ছিল ৪৩৬। হনুমা মারতে গিয়ে ফেরেন ১০ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতেই হয়নি।
ঋদ্ধিমান সাহাঃ ঋদ্ধিমান সাহার এটা কামব্যাক সিরিজ। চোট সারিয়ে দীর্ঘদিন বাদে ফিরেছেন টেস্ট দলে। প্রথম ইনিংসে রান বাড়ানোর চেষ্টায় ফেরেন ২১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে নামতে হয়নি। কঠিন পিচেও উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে নিয়েছেন দুরন্ত ক্যাচ। ভরসা দিয়েছেন দলকে। রেখেছেন অধিনায়কের আস্থার মর্যাদাও।
রবীন্দ্র জাদেজাঃ রবীন্দ্র জাদেজা ব্যাটে-বলে যথারীতি থেকেছেন অসাধারণ। প্রথম ইনিংসে ৩০ রানে অপরাজিত, দ্বিতীয় ইনিংসে আক্রমণাত্মক ৪০। বাঁ-হাতি স্পিনে মোট শিকার সংখ্যা ছয়। তার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন চার উইকেট। নিজের বোলিংয়ে নিয়েছেন দুরন্ত ক্যাচও।
রবিচন্দ্রন অশ্বিনঃ রবিচন্দ্রন অশ্বিনেরও ছিল প্রত্যাবর্তনের টেস্ট। এবং তিনি সফল। প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংসে ১৪৫ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন সাত উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন এক উইকেট। টেস্টে ৩৫০ উইকেট হয়ে গেল তাঁর। ৬৬ টেস্টে এই কৃতিত্বে পৌঁছে মুরলীধরনের সঙ্গে একাসনে বসলেন তিনি।
ইশান্ত শর্মাঃ ইশান্ত শর্মা বিশেষ কিছু করেননি প্রথম টেস্টে। প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন এক উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে কোনও উইকেট পাননি। পুণেয় কি তাঁর জায়গায় তৃতীয় স্পিনার হিসেবে চায়নাম্যান কুলদীপ যাদবকে খেলানো হবে? তবে জয়ী দলও রেখে দিতে পারেন বিরাট-শাস্ত্রীরা।
মহম্মদ শামিঃ মহম্মদ শামি দেখিয়েছেন বল রিভার্স করলে তিনি কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। বিশাখাপত্তনমে কোনও দলের পেসাররাই নজর কাড়তে পারেননি। একমাত্র ব্যতিক্রম শামি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে ১০.৫ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। যা ভারতের জয় নিশ্চিত করে।