দেশের প্রথম বিশেষায়িত ট্যুারিজম পার্ক গড়ে উঠছে পাহাড় আর নদী ঘেরা নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের আঁধার নাফ নদীর জালিয়া দ্বীপটিকে ঘিরে ।২৯১ একর ভূমির এই দ্বীপকে আন্তর্জাতিকমানের ট্যুরিজম পার্কে রুপ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
দেশে একশ’ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এই পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলছে। ২০১৮ সালে দ্বীপটিতে পর্যটকদের যাওয়ার উপযোগী করতে চায় বেজা।সংবাদ সংস্থা বাসসের বরাতে এ তথ্য জানা যায়।
ট্যুরিজম পার্কে থাকছে পাঁচ তারকা হোটেল, ঝুলন্ত সেতু, ৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার ক্যাবল কার নেটওয়ার্ক, রিসোর্ট, ভাসমান জেটি, শিশু পার্ক, ইকো-কটেজ, ওসানেরিয়াম, ওয়াটার রেস্টুরেন্ট, ভাসমান রেস্টুরেন্টসহ বিনোদনের বিভিন্ন আয়োজন রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, নাফ ট্যুরিজম পার্ক দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেবে। থাইল্যন্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের পর্যটন স্পটে যে ধরনের বিনোদন সুবিধা রয়েছে, তার তুলনায় আরো উন্নতমানের অবকাঠামো সুবিধা এখানে রাখা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নাফ ট্যুরিজম পার্ক উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার ওপরে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, নাফ ট্যুরিজম পার্কের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য গত বছর জার্মানিভিত্তিক ইউনিকনসাল্ট নামের একটি কোম্পানিকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছিল বেজা।ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কক্সবাজারে কমপক্ষে ২৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণে যাবে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ যাবে নাফ ট্যুরিজম পার্কে। সম্প্রতি জালিয়া দ্বীপ ঘুরে দেখা গেছে সেখানে শোভা বর্ধন বাড়াতে বৃক্ষ রোপন করা হচ্ছে।বিদ্যুতায়নের কাজ শুরু হয়েছে।
এছাড়া ভূমি উন্নয়নের কাজ শুরু করতে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান করেছে বেজা। দ্বীপের চারদিকের বাঁধ নির্মাণের নকশা সম্পন্ন হয়েছে।শিগগিরই এই কাজের দরপত্র আহবান করা হবে।
ঢাকা থেকে জালিয়ার দ্বীপের দূরত্ব ৪৫৬ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে ১৮৫ কিলোমিটার। তবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে এর দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। এই দ্বীপ থেকে সেন্ট মার্টিনস দ্বীপে যেতে এক ঘণ্টা সময় লাগে।
জালিয়ার দ্বীপটি নাফ নদীর মাঝখানে অবস্থিত। এর একপাশে মিয়ানমার, অপর পাশে বাংলাদেশের নেটং পাহাড়।এই দ্বীপে দীর্ঘদিন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মাছের চাষ করতেন। তবে বেজার উদ্যোগে দ্বীপটি দখলমুক্ত করা হয়।এখন সেখানে রাস্তাঘাট ও দ্বীপে যাওয়ার জন্য একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে টেকনাফের সাবরং পর্যন্ত সাগরের কোলঘেষে ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ (বিশ্বমানের সড়ক) ধরে পর্যটকরা সাগরের উত্তাল ঢেউ এবং পাহাড়ের সৌন্দর্ষ উপভোগ করতে করতে নাফ ট্যুরিজম পার্কে পৌঁছাতে পারবেন।