আট বছর পর জাতীয় পরিবেশ কমিটির সভা হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সভায় উপস্থিত থাকছেন। সভায় জাতীয় পরিবেশ নীতিসহ ৬টি বিষয় উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে তা যুগোপাযোগী নামকরণ। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ ও বনের সঙ্গে জলবায়ু বিষয়টি যোগ হতে পারে। এ ছাড়াও সভায় মংলা বন্দর ও সুন্দরবন প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র প্রদানের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। জাতীয় পরিবেশ নীতি নিয়ে কমিটির সর্বশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। আজকের সভায় এর আগের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করার সম্ভাবনার কথা আভাস দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।
জানা গেছে, বর্তমান পরিবেশ পরিস্থিতিতে খসড়া জাতীয় পরিবেশ নীতি অনুমোদনের বিষয়টি সবচেয়ে অগ্রাধিকার পেতে যাচ্ছে। অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থ ছাড়া পাহাড় কিংবা টিলা কাটায় নিষেধাজ্ঞা, মটরযানের ফিটনেস সনদ গ্রহণ কিংবা নবায়নের আগে নির্গমন পরীক্ষণ সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করাসহ প্রায় শতাধিক নির্দেশনা নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। ৫৫ পৃষ্ঠার এই জাতীয় পরিবেশ নীতিতে পাহাড় প্রতিবেশসহ ভূমি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ, নিরাপদ খাদ্য ও সুপেয় পানি, কৃষি, জনস্বাস্থ্য, আবাসন, নগরায়ন, বন ও বন্য প্রাণী, জীববৈচিত্র্য, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক প্রতিবেশ, প্রতিবেশবান্ধব পর্যটন, যোগাযোগ ও পরিবহন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুতি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অন্যান্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ আরো অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বাস্তবায়ন কার্যক্রম সর্ম্পকেও কার কি করণীয় সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে এই পরিবেশ নীতিতে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশে পরিবেশ বিপর্যয় ও নানা ধরনের বিরূপ প্রভাবের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই এই জাতীয় পরিবেশ নীতি তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯২ সালে একবার পরিবেশ নীতি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এনে নতুন করে এই পরিবেশ নীতি তৈরি করার প্রয়োজনীতা দেখা দিয়েছে। এই নীতিতে মোট ২২টি বিষয় মূল বিবেচনায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর মানুষের চাপ কমিয়ে এনে টেকসই উন্নয়ন করা। এর পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদের আহরণ, ব্যবহার ও পরিবেশ সংরক্ষণ আধুনিকায়ন করা। আর ১৫টি উদ্দেশ্যে এই পরিবেশ নীতি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা। পরিবেশের সব ক্ষেত্রে দূষণ ও অবক্ষয়মূলক কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা ও তা নিয়ন্ত্রণ করা।