ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে স্বপ্নের ও গৌরবের পদ্মা সেতু। দেশের এই মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। সেতুতে মোট স্প্যান বসবে ৪২টি। তার মধ্যে নবম স্প্যান বসানোর ফলে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হলো ১৩৫০ মিটার বা ১.৩৫ কিলোমিটার। আজ শুক্রবার (২২ মার্চ) সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে জাজিরা প্রান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের উপর বসানো হয় ধুসর রংয়ের ১৫০ মিটার ও তিন হাজার ১৪০টন ওজনের ‘৬ডি’ স্প্যানটি।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও স্প্যান বহনকারী ক্রেনের তার (রোপ) ছিড়ে যাওয়ায় এবং নাব্যতা সমস্যার কারণে তা আর হয়ে উঠেনি।
পদ্মাসেতুর প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর ৫টা থেকেই স্প্যান বসানোর জন্য কার্যক্রম শুরু হয়। স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটিকে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের পজিশন অনুযায়ী রাখা হয়। এরপর ক্রেনের সাহায্যে ধীরে ধীরে স্প্যানটিকে পিলারের বিয়াংয়ের ওপর বসানো হয়। স্প্যানটিকে অষ্টম স্প্যানের সঙ্গে জোড়া দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সফলতার সঙ্গে এসব কাজ করা হয়। পুরোপুরি স্থায়ীভাবে বসতে আরও সময় লাগবে।
এর আগে, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান, ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যান, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান এবং গত ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়েছে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্প্যান বসানোর পর ৯০০ মিটার দৃশ্যমান হয়। এরপর গত বুধবার (২০ মার্চ) ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর অষ্টম স্প্যান বসানোর পর জাজিরা প্রান্তে ১ হাজার ৫০ ও মাওয়া প্রান্তে ১৫০ মিলিয়ে মোট ১ হাজার ২০০ মিটার দৃশ্যমান হয়।
৪২টি পিলারের ওপর এমন ৪১টি স্প্যানের সাহায্যে পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি গেলেও পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি দেখে সন্তুষ্ট স্থানীয়রা।