প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানসহ বর্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৬১ জন যুদ্ধাপরাধীর প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন।বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিট ভবনের স্বাধীনতা হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন তথ্য অনুসন্ধান কমিটির আহবায়ক মাহাবুব উদ্দিন আহমদ তথ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এ সময় নৌ পরিবহন মন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের আহবায়ক শাজাহান খানসহ সংগঠনের অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাহাবুব উদ্দিন আহমদ বলেন, ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্য যারা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত তাদের বিচারের দাবিতে ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। পালিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি সৈন্য ও সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের দাবিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে বর্তমান সরকারের কাছে ২১ দফা দাবী ও প্রস্তাব জানানো হয়।
তিনি বলেন, ২৬১ জনের মধ্যে ৪৩ জন সিনিয়র পাকিস্তানি জেনারেল, মেজর জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার, লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং দুই-একজন বেসামরিক কর্মকর্তাও আছেন। সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এর মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করে। একই সাথে সংগঠনের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালকে সহযোগিতা করার জন্য মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রমকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের একটি ‘তথ্য অনুসন্ধান’ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দু’জন সদস্য হলেন- ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন বীর উত্তম এবং হাবিবুল আলম বীর প্রতীক। কমিটি নিরলস পরিশ্রম করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের নিকট প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত অর্পণ করেছে। তথ্য সংগ্রহ কমিটির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং পর্যায়ক্রমে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কমিটির নিকট অর্পন করা হবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, জঙ্গীবাদ নির্মূল, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে। ৬ জনের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। অনেকগুলো মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, বর্বর পাক সেনাদের বিচার ত্বরান্বিত করা এবং তাদের কাছে বাংলাদেশের পাওনা ৩৫ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লড়াইয়ে সকলকে এক হতে হবে।
নৌ-মন্ত্রী বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত গোষ্ঠী যেন বাংলাদেশে আর কোন দিন মাথা চাড়া দিয়ে না উঠতে পারে সেজন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালের পাক হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসর-রাজাকার-আলবদরদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ ও ঘৃণা সৃষ্টি করতে হবে। পাকিস্তানিরা মুক্তিযুদ্ধের সময় যে নৃশংস হত্যাকান্ড, ধর্ষণ ও লুট করেছে সেজন্য এখনো তারা বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি। তাদেরকে অবশ্যই তাদের অপকর্ম ও নৃশংসতার জন্য বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। বিবি/০৩