ডিএমপি নিউজঃ আইন শৃংখলা রক্ষায় পুলিশের ক্ষমতা, দায়িত্ব, পেশাদারিত্বপূর্ণ আচরণ এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে জবাবদিহিতা কেমন হবে এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
পুলিশের পোশাদারিত্বের মানোন্নয়নের উদ্যোগ হিসেবে আজ ৩১ জুলাই’১৭ সকাল ১০ টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে শহীদ শিরু মিয়া মিলনায়তনে একটি ব্রিফিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিএমপি সদর দপ্তর ও প্রশাসন বিভাগ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) মোঃ আনোয়ার হোসেন ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায় প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দায়িত্বরত পুলিশের আইন শৃংখলা রক্ষা ও বেআইনী সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যে সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন ও আচরণ পরিহার করতে হবে সেগুলো তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো- আইনবলে পুলিশের বেআইনী সমাবেশ বা শোভাযাত্রা ছত্রভঙ্গ করার ক্ষমতা, ছত্রভঙ্গের ক্ষেত্রে বল প্রয়োগের পূর্বে করণীয়, বল প্রয়োগের ধরণ, বল প্রয়োগে আইনী বৈধতা, বল প্রয়োগের কৌশল, বল প্রয়োগের ধারাবাহিকতা, মিডিয়ার সাথে পেশাাদারিত্বপূর্ণ আচরণসহ নানাবিধ বিষয়। এছাড়া তিনি পুলিশের পেশাদারিত্ব সহনশীলতা এবং জনদূর্ভোগ পরিহারের লক্ষ্যে নির্মিত ডকুমেন্টারী উপস্থিত অফিসার ও ফোর্সের সম্মুখে প্রদর্শন করেন।
এ সময় আলোচ্য বিষয়ে নিজ নিজ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) মীর রেজাউল আলম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আব্দুল বাতেন, রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার ও মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ শিবলী নোমান।
আলোচনায় উঠে আসে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। যার মধ্যে রয়েছে- পুলিশের ইমেজ উন্নত করণ, অতীতের ভুল হতে শিক্ষা নেয়া, ক্রটি বিচ্যুতি হতে কিভাবে উত্তরণ করা যায় সে বিষয়ে নজর রাখা, জনদূর্ভোগ না হয় যাতে সে বিষয়ে বল প্রয়োগের পূর্বে সচেতন থাকা, নন লেথাল/লেস লেথাল/লেথাল অস্ত্রের প্রয়োগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করণ। এক্ষেত্রে উপস্থিত সিনিয়র অফিসারের নির্দেশ মানতে হবে।
ফোর্সকে দায়িত্বশীল আচরণের আহবান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন- সকলের নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা আছে পুলিশের কোন কর্মঘন্টা নাই। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ঝড়-বজ্রপাতসহ নানান প্রতিকূল অবস্থায় আমরা কাজ করি। আমরা জীবন বিসর্জন দিয়েছি, করেছি আত্মত্যাগ। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সিনিয়র অফিসারের আদেশ মেনে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। কে কে গ্যাসগান, শর্টগান ফায়ার করবে তা আগে থেকে ঠিক করে রাখতে হবে। কমান্ডারের আদেশে প্রয়োজন মত ফায়ার করতে হবে। কোন অবস্থায় অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন- টিম ডিএমপি হচ্ছে লিডার অব দ্যা লিডারস। ডিএমপি’র রায়ট কন্ট্রোল, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ যাবতীয় বিষয় সব ইউনিটের অনুকরণীয়। নিরীহ, ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান, আল্লাহ আপনার পাশে থাকবে। এমন কোন কাজ করবেন না যাতে কেউ হয়রানির শিকার হয়। আমরা ফোর্সের কল্যাণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি। আইজিপি কমিশনারের যেমন ট্রিটমেন্ট হয় কর্তব্যরত অবস্থায় কোন পুলিশ সদস্য আহত হলে ঠিক তেমনি তাকেও উন্নত চিকিৎসা দেয়া হয়।
পুলিশ সদস্যদের অনুরোধ জানিয়ে কমিশনার বলেন- এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আমাদের হাজারো অর্জন ম্লান হয়ে যায়। সকলকে সতর্ক অবস্থায় নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে আহবান জানান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) মোঃ শাহাব উদ্দিন কোরেশী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( ক্রাইম এন্ড অপস) মোঃ মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
আগামীকাল সকালে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) মিরপুর বিভাগের অফিসার ও ফোর্সদের এ বিষয়ে ব্রিফিং করা হবে।