ডিএমপি নিউজঃ ‘পুলিশ ছিলো বলেই আমার জীবন রক্ষা পেল’ অপহৃত হওয়ার তিন দিন পর উদ্ধার হয়ে কাঁদতে কাঁদতে ভিকটিম সিয়াম এভাবে তার নতুন জীবন ফিরে পাবার আনন্দ প্রকাশ করলো।
রাজধানীর ওয়ারী থানাধীন ৪২ বিসিসি রোড এলাকা হতে গত ১৬ জুলাই’১৭ মোঃ শওকত হোসেন টিপুর ষ্ট্যান্ডার্ড নাইনে পড়ুয়া ছেলে সিয়ামকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণ করে নেয়ার পর সিয়ামকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে এবং মুক্তিপণের জন্য সিয়ামের বাবার কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করলে সিয়ামের বাবা ওয়ারী থানায় গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ করে। অভিযোগের ভিত্তিতে ওয়ারী থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সূত্র ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান করতে থাকে। অভিযোগের তিন দিন পর অর্থাৎ ১৯ জুলাই ভোররাত ৪ টায় অপহৃত সিয়ামকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন দক্ষিণ কাজলা এলাকার ১৬৬/এ বাসা থেকে বন্দীদশা থেকে উদ্ধার করে ওয়ারী থানা পুলিশ। এ সময় অপহরণের মূলপরিকল্পনাকারী মাহবুবুর রহমান সুমনসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় অপহরণে ব্যবহৃত মটর সাইকেল ও ভিকটিমকে বেঁধে রাখার রশি, চেয়ার ও গামছা।
উদ্ধার হওয়া ভিকটিম সিয়ামকে অপহরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে- গত ১৬ জুলাই আমার বাসায় ইন্টারনেট না থাকায় নেট ব্যবসায়ী সুমনকে ফোন দিই। নেট না আসায় ঐদিনই বিকাল ৪ টায় আমি আবার সুমনকে ফোন দিলে সে আমাকে আমার বাসার নিচে আসতে বলে। আমি বাসার নিচে এসে দেখি মোটর সাইকেলে সুমন ও তার ভাতিজা অনন্ত বসে ছিলো। দুইজনই আমার এলাকার পরিচিত লোক, আমাকে নিয়ে ওয়ারী এলাকায় ঘুরবে বলায় আমি মোটর সাইকেলে উঠি। আমি মোটর সাইকেলের মাঝখানে বসি। ওয়ারী এলাকায় না ঘুরে তারা আমাকে হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যাত্রাবাড়ীর কাজলার দিকে নিয়ে যেতে থাকে।
টোল প্লাজার সামনে আসলে কে বা কারা ডিম মারলে অনন্তের গায়ে লাগে। পরে ডিমের ময়লা পরিস্কার করার কথা বলে কাজলার একটি বাসায় আমাকে নিয়ে যায়। বাসায় আমার সাথে কথা বলতে বলতে বলে পিছনের রুমটা দেখার জন্য। আমি পিছনের রুমে গেলে তাৎক্ষণিক আমার হাত, পা, চোখ বেধে ফেলে। চোখ বাধার পরও সামান্য খোলা থাকায় আমি ঐখানে রাব্বি, রাব্বি হাছান, তরিকুল, শামীম, জিমি ও সুমনকে দেখতে পায়। রাব্বি হাছানের হাতে ছুরি ছিল। আমাকে ওরা মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করতো আর বলতো তোর বাপে টাকা দিলে তোকে ছেড়ে দিবো। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া সিয়াম পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলে, পুলিশের তৎপরতার কারণে আমার জীবন রক্ষা পেয়েছে এবং আমি আমার বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে পেরেছি।