ডিএমপি নিউজঃ পুলিশ সপ্তাহ বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের অংশগ্রহণে প্যারেড প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান শীল্ড প্যারেড একটি অন্যতম ইভেন্ট। এ ইভেন্টে পিটি ও প্যারেডের নৈপূণ্যতা দেখিয়ে থাকে পুলিশ সপ্তাহে অংশগ্রহণ করা প্যারেড কন্টিনজেন্টস। আজ পুলিশ সপ্তাহের তৃতীয় দিন। অনুষ্ঠিত হল বার্ষিক পুলিশ কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতা ও আইজিপি ব্যাজ পরিধান অনুষ্ঠান। শীল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতা ২০২০ এ প্রথম হয়েছে যৌথ মেট্রোপলিটন পুলিশ ও পুলিশ সপ্তাহ প্যারেডে প্রথম হয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ শীল্ড প্যারেডে যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ সপ্তাহ প্যারেডে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ এবং যৌথ মেট্রোপলিটন পুলিশ দল । বিজয়ী ইউনিটকে ট্রফি ও শীল্ড প্রদান করেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
বার্ষিক পুলিশ প্যারেড ও শীল্ড প্যারেডে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বলেন, এইবার পুলিশ সপ্তাহের জন্য দুই লক্ষাধিক জনবলের মধ্যে এক হাজার সদস্যকে প্যারেডের জন্য বাছাই করা হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্যারেড দেখে খুশি হয়েছেন এবং অনেক প্রশংসা করেছেন। যারা এবারের পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন প্যারেড উপহার দিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণাও দেন আইজিপি।
আইজিপি বলেন, এবারের পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন হচ্ছে ভিন্ন আঙ্গিকে। এবারের যে প্রতিবাদ্য তা হচ্ছে ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার’। আমরা জনতার পুলিশ হবার জন্য, জনগণের পুলিশ হবার জন্য, মানবিক পুলিশ হবার জন্য, স্বপ্নের পুলিশ হবার জন্য নিরন্তন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ সপ্তাহের প্রোগ্রামে পুলিশকে জনতার পুলিশ হবার আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে এই এখানেই রাজারবাগের এই মাঠেই বঙ্গবন্ধু পুলিশকে জনগণের পুলিশ হবার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমরা সত্যিকার অর্থে এই মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করেছি, ‘পুলিশ হবে জনতার’।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ পরিচালিত হবে স্বাধীনতার চেতনায়। দেশের এই অগ্রযাত্রার সাথে সাথে আমাদের হতে হবে উন্নত দেশের আধুনিক পুলিশ। মানবিক ও জনগণের পুলিশ হতে আমাদেরকে আরও বেশি জনসম্পৃক্ত হতে হবে।
সম্প্রতি পুলিশে নিয়োগ ও পদায়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও একাধিকবার প্রশংসা করেছেন অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতে আমরা গর্বিত অনুপ্রাণিত। কর্মক্ষেত্রে স্বচ্ছতার এধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
আইজিপি বলেন, আমরা থানাকে করতে চাই মানুষের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক। আমরা জানি, অসহায় ও নিপীড়িত মানুষ প্রথমে থানায় আসে। থানা হলো পুলিশের সেবার কেন্দ্রবিন্দু। সুতরাং থানাকে হতে হবে সেবার রোল মডেল। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। আমরা সে লক্ষ্যে দেশের প্রায় ৭০০ থানার ওসিদের পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ডেকে মাদক-জঙ্গিবাদ নির্মুল ও দুর্নীতি বিরুদ্ধে কি ভূমিকা নিতে হবে সেটা ব্রিফ করেছি। সুতরাং আমরা আশা করি তারা (ওসিরা) হবেন মানুষের সেবা ও নির্ভরতার প্রতীক।
মাদক নিরব ঘাতক জানিয়ে আইজিপি বলেন, মাদক নির্মূলে নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। যা মাদক নির্মুল না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ইনশাল্লাহ আমরা জয়ী হবো। পুলিশের চলমান স্ট্যাটেজিক পরিকল্পনায় আমরা মাদক জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছি। চলমান অভিযানের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক ব্যবসায়ী চরমপন্থিরা আত্মসমর্পন করছে।
মাদক কারবারিদের সাথে পুলিশের কারও কোন সখ্যতা-সম্পৃক্ততা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে শুধু বিভাগীয় ব্যবস্থা নয়, প্রচলিত মামলায় আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়া হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় মাদক, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এসময় পুলিশ সপ্তাহ ২০২০ এর সর্বাত্মক মঙ্গল কামনা করেন আইজিপি।