সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল পূর্ব ঘৌটার যুদ্ধে শতাধিক শিশুসহ ৫৬০ জন নিহত হয়েছে। শহরটির পুনর্দখল নিতে আসাদ বাহিনী গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে হামলা চালিয়ে আসছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নয় দিনের যুদ্ধে নিহত হয়েছেন দুই সহস্রাধিক মানুষ। অবরুদ্ধ ওই এলাকায় থাকা সিরীয় সাংবাদিক মাহমুদ সেরাগ মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট মনিটরকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জাতিসংঘের অস্ত্রবিরতি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মানবিক বিরতির ঘোষণার মধ্যেও ঘৌটায় বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনী। এর আগে মেডিসিন স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স ১০ দিনে আসাদ বাহিনীর হামলায় ৭০০-এরও বেশি মানুষ নিহতের খবর পাওয়ার কথা জানিয়েছিল। তাদের দাবি অনুযায়ী এই সময়ে আহত হয়েছেন তিন হাজার ৭০০ মানুষ। তবে সাংবাদিক মাহমুদ সেরাগ ৫৬০ জনের নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মাহমুদ সেরাগ জানান, আহতদের মধ্যে ছয়শো শিশু ও পাঁচ শতাধিক নারী রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নিহত হওয়া ৫৬০ জনের মধ্যে ১০৭ জন শিশু, ৬৭ জন নারী ও ৩৭৭ জন পুরুষ ও দুই জন বিদ্রোহী সংগঠন হোয়াইট হেলমেট অথবা সিরীয় বাহিনীর সদস্য ছিলেন। নিজস্ব সূত্রের বরাতে মিডলইস্ট মনিটর জানিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে ১৭২ বার আগ্নেয়াস্ত্র, ২৮৪ টি বিসে্ফারক ব্যারেল, ৩ হাজার ৮৭৯ টি রকেট লাঞ্চার, ৪২২টি ভূমি থেকে নিক্ষিপ্ত মিসাইল, ৮২৩ টি বিমান হামলা, ৩ হাজার ২৬৭ টির আর্টিলারি গোলাবর্ষণ ও ১৫টি ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার হয়েছে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর নিহত হয়েছে ৬৮ জন। এদের মধ্যে ১৭ জন শিশু, ১১ নারী ও ৪০ জন পুরুষ রয়েছেন। এই সময়ে আহত হয়েছে দুই শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে একটি এলাকাতেই ব্যবহার হয়েছে, ২৪ টি বিস্ফোরক ব্যারেল, ৭২৬ টি রকেট লাঞ্চার, ১৩৭ টি ভূমি থেকে নিক্ষিপ্ত মিসাইল ও ১৮২ টি বিমান হামলা।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৮ টি বিমান হামলায় দুমাতে আটজন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন বৃহস্পতিবারের বিমান হামলা ও আগের হামলায় আহত হওয়া পাঁচজন নিহত হয়। এছাড়া বৃহস্পতিবারের হামলায় আওটায়া এলাকায় হোয়াইট হেলমেটের এক সদস্যও নিহত হয়। তিনি জানান, এসব বিমান হামলা হারাস্তা, দুমা, আরবিন, কাফর বাতনা ও বেইত সাওয়া এলাকায় চালানো হয়েছে।
২০১৩ সাল থেকে ঘৌটার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আসাদ বিরোধীদের কাছে। রাজধানী দামেস্কের কাছে সর্বশেষ বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাটির পুনর্দখল নিতে চলতি মাসের শুরুর দিকে অভিযান জোরালো করে সরকারি বাহিনী। এতে শত শত মানুষ হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।