ডিএমপি নিউজঃ কিভাবে পৃথিবীর বড় বড় ধনী ও ক্ষমতাবান লোকেরা আয়কর এড়ানোর জন্য বিভিন্ন ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছেন। তারই সব তথ্য ফাঁস করার জন্য পানামা পেপার্স এরপর প্যারাডাইস পেপার্স আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
রবিবার প্যারাডাইস পেপার্স নামে যে এক কোটিরও বেশি গোপন দলিলপত্র প্রকাশিত হয়েছে তাতে উঠে এসেছে বড়বড় ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের আয়কর ফাঁকির চিত্র।
ইতোমধ্যে প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারীতে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখেরও বেশি দলিলপত্র পাওয়া গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
বিশ্লেষকরা তাদের অভিমতে বলেছে, বিদেশি বিনিয়োগ বা অফশোর এখন একটি ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার কোটি ডলার গচ্ছিত রাখা হয়েছে তাও আবার আয়কর কর্তৃপক্ষের আওতার বাইরে। কিন্তু প্রশ্ন থাকে বিত্তবানরা তাদের নিজ দেশের আয়কর কর্তৃপক্ষকে এড়াতে কিভাবে এই কৌশল ব্যবহার করে? উত্তরে বিশ্লেষকরা বলছেন, পাঁচটি ধাপে নগদ অর্থ গোপন রাখা যায় যা বেশ সহজ ও নিরাপদ ভাবা হয়।
ধাপের শুরুতে শুধু নাম দিয়ে একটি কোম্পানি গঠন করতে হয়। অফশোর বা বিনিয়োগকারী যে দেশের মানুষ, তা থেকে আলাদা কোনো দেশে, যেখানে খুব কম বা শূন্য আয়করের সুবিধা পাওয়া যায়, সেখানেই এই কোম্পানিটি কাজ করে । এগুলো প্রায়ই হয় ছোট ছোট দ্বীপে। যেমন, বারমুডা, কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ বা ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস অথবা ইংল্যান্ডের আইল অব ম্যান, গার্নসি, বা জার্সি। সেখানে অর্থ জমা রাখার ক্ষেত্রে কড়া গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। সে কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থের বিনিময়ে একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয় যাতে দলিল-দস্তাবেজে প্রকৃত মালিকের নাম না থাকে।
এছাড়া প্রকৃত মালিকের নাম যাতে প্রকাশিত না হয় সেজন্য বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ভিন্ন আরেকটি দেশে অর্থাত্ অফশোরে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। সেই অ্যাকাউন্টে গিয়ে ওই কোম্পানির অর্থ জমা হবে।
লেনদেনকৃত অর্থ কোম্পানির সম্পত্তিতে খরচ করা হয়। অথবা ঋণ বাবদ যেটি কখনোই পরিশোধ করা হয় না। যেমন – এর দ্বারা আপনি বাড়ি, গাড়ি এবং অন্যান্য সম্পদ ক্রয় করতে পারেন। আয়কর থেকে নগদ অর্থ লুকানোর জণ্য এটি একটি উপায় মাত্র।
বস্টন কনসালটিং গ্রুপের সূত্র মতে, এ পদ্ধতিতে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে যে পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত আছে সেটি পরিমাণ প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার। এটি জাপান, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের মোট অর্থনৈতিক উৎপাদনের চেয়ে বেশি।
পৃথিবীতে অনেক ধনী ব্যক্তি ও ক্ষমতাবানরা প্রতিনিয়ত কোন কোন নতুন নিয়মে আয়কর ফাঁকি দিয়ে দেশের টাকা অন্য কোন দেশে নিরাপদভেবে বিনিয়োগ করছে। আর সরকার হারাচ্ছে তার অধিকার।