ডিএমপি নিউজ : প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘বাবা ঘরে আসুক, কারাগার থেকে ফিরুক মা’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার হাফসা আক্তার পুতুল ও তার স্বামী আব্দুল হামিদ ভূইয়া সম্পর্কে ২৯ নভেম্বর পত্রিকাটিতে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা সঠিক নয়।
প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত হাফসা আক্তার পুতুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গত ২০ নভেম্বর বিকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিন ডিএমপির কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা রুজু হয়। মামলাটি তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ককটেল হামলার সাথে জড়িত অভিযুক্তদের অবস্থান সনাক্ত করে পুলিশ। এরপর গত ২৬ নভেম্বর শ্যামপুর থানার গ্লাস ফ্যাক্টরির গলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাফসা আক্তার পুতুলকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত থেকে ককটেল হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও একটি ভ্যানিটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ককটেল বিস্ফোরণের সময় ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও ফুটেজেও এই মোটরসাইকেল ও ভ্যানিটি ব্যাগ দেখা গেছে।
গ্রেফতারের পর হাফসা আক্তার পুতুলকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, গত ২০ নভেম্বর অন্য একটি মামলায় তার দেবর আঃ রহমানকে কোর্টে আনবে এমন তথ্য পেয়ে পুতুল তার স্বামী আব্দুল হামিদ ভূইয়া ও তাদের ছোট মেয়েসহ মোটারসাইকেলে করে বাসা থেকে কোর্টের উদেশ্যে রওয়ানা দেয়। তারা প্রথমে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তাদের মোটরসাইকেলটি রাখে। তারা সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানকালে আব্দুল হামিদ তার স্ত্রী পুতুলের কাছে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগে একটি ককটেল রাখতে দেয়। পরে তারা আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ৪র্থ তলায় উঠে। সেখানে আব্দুল হামিদ তার স্ত্রী পুতুলের ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ককটেলটি বের করে আদালত প্রাঙ্গণে ছুড়ে মারে। যার ফলে ককটেলটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। ঘটনার পর তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার পুলিশ রিমান্ড শেষে হাফসা আক্তার পুতুলকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
প্রথম আলোর সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে হামিদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার এড়াতে বাসায় থাকছেন না।
প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, হাফসা আক্তার পুতুলের স্বামী হামিদ কোতোয়ালী থানায় ২০ নভেম্বর দায়ের করা মামলার আসামী। এই মামলা দায়েরের পর থেকে তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
গতকাল বুধবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকায় একটি মানববন্ধনে বিএনপি করা অপরাধ কি না এমন প্রশ্ন তুলে আবদুল হাই ভূঁইয়া বলেন, ভোটের অধিকারের জন্য তাঁর ছেলেরা আন্দোলন করেছেন। এটাই কি তাঁদের অপরাধ? তাঁর বড় ছেলে আবদুল হামিদ ভূঁইয়াকে পুলিশ খুঁজছে। না পেয়ে ছেলের স্ত্রী হাফসা আক্তারকে তুলে নিয়ে যায়।
ডিএমপির স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, ওয়ারী থানা যুবদল নেতা হামিদ ও তার স্ত্রী হাফসা আক্তার পুতুল আদালত প্রাঙ্গণে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামী। আন্দোলন করার জন্য নয়, বরং এই মামলার আসামী হিসেবেই হাফসা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।