এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সফররত ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েনচাই ঝাং বাংলাদেশকে সহায়তার কথা পুনঃব্যক্ত করে বলেন, টেকসই উন্নয়ন ও লক্ষ্যমাত্র (এসডিজি) অর্জন এবং প্রবৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা পূরণে এডিবি সবধরণের সহায়তা দিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা সমূহ অর্জনে অবকাঠামো উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, শিক্ষার মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির পরিসর বৃদ্ধি এবং আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষত নারীদের জন্য, এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে এডিবি প্রস্তুত’। খবর বাসস।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এডিবি’র বাংলাদেশ আবাসিক মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে ভাইস প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাস উপস্থিত ছিলেন।
এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, এই আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে দেশটির সরকারের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের পরিকল্পিত একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম শুরু হলে এদেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে’।
বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতিমধ্যে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির চলমান ধারা অব্যহত রাখার পাশাপাশি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে’।
বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচিতে এডিবি’র অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী দিনগুলো বাংলাদেশের অবকাঠামো ও গ্রামীন উন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতাকে গুরুত্ব দিবে এডিবি। তিনি এসব ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সহযোগিতা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘বিবিআইএন’ যান চলাচল চুক্তির প্রশংসা করেন।
এডিবি’র ঋণদানের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১৬ থেকে ২০১২০ পর্যন্ত এডিবির ঋণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এডিবির ঋণের পরিমান ছিল ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার’। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যদি রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহায়তা চায়, তাহলে এডিবি সহায়তা করতে রাজি আছে। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি মিয়ানমারে ফিরে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফেরাম’-এ তার অংশগ্রহণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সহ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের কথা তুলে ধরেন।