কখন মাথায় চলন্ত ড্রিল মেশিন ঠেকিয়ে, কখন আবার খাবার হিসেবে লোহার মত ধাতু খেয়ে প্রাকৃতিক শক্তিতে সবার থেকে যারা এগিয়ে আছে তাদেরকে আমরা বলে থাকি সুপার হিউম্যান। এমনই কিছু সুপার হিউম্যান রয়েছে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে।বিভিন্ন সিনেমা ও কার্টুনে প্রাকৃতিক শক্তির অধিকারী বিভিন্ন হিরোকে দেখা যায়। যাদের প্রাকৃতিকভাবে কিছু শক্তি রয়েছে। যা সাধারণ মানুষের নেই। যাদের সবাই সুপার হিরো হিসেবে জানে। দেখে নেয়া যাক প্রাকৃতিক শক্তিতে সবার থেকে সেরা যারা।
লুইস সিয়ার- সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ: কানাডার কুইবেকে জন্মগ্রহণকারী লুইস সিয়ারকে এখন পর্যন্ত ইতিহাসের সবচাইতে শক্তিশালী মানুষ হিসেবে গন্য করা হয়। তার করা ভার উত্তোলনের রেকর্ড এখনো কেউ ভাঙতে পারে নি! তিনি এক আঙ্গুল দিয়ে ৫৩৫ পাউন্ড বা ২৫০ কেজি ওজন উত্তোলন করেছিলেন এবং ব্যাক লিফটিং এ ৪,৩৩৭ পাউন্ড বা ১৯৭০ কেজি ভার উত্তোলন করেছিলেন! শক্তিমান এই মানুষটির মৃত্যু হয়েছিল কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়ে! তার স্মৃতি রক্ষার্থে কানাডার কুইবেকে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ ও করেছে!
উইম হোফ- বরফ মানব: ডেনমার্কের উইম হুফ প্রচণ্ড বরফে উপর উদাম শরীরে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে পারেন তিনি! তাপমাত্রা যেখানে মাইনাস ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ও কম! শুধু বরফের ওপর না, কনকনে বরফের নিচে সঞ্চিত পানিতেও তিনি খুব স্বাভাবিক থাকতে পারেন! গবেষকরা তাকে বরফে ঢেকে শরীরের ভেতরে কি ঘটে সেটা জানার গবেষণা চালিয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত তার কমপক্ষে ২০টি বিশ্ব রেকর্ড রয়েছে!
নিনা কুলাগিনা- মনের শক্তি দিয়ে কোন বস্তু সড়াতেন: নিনা কুলাগিনা দাবি করেছিলেন যে তার মনের শক্তি দিয়ে কোন বস্তু উত্তোলন কিংবা নড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে! তাকে নিয়ে গবেষণা করার পর এ বিষয়ে সত্যতা উন্মোচিত হয়েছিল। তিনি রাশিয়ার সোভিয়েত ইউনিয়িনের এক গোপন অস্ত্র ছিলেন। অনেক অসাধ্য কাজ তাকে দিয়ে করিয়েছে বলে জানা যায়। তাকে নিয়ে ইউটিউবে এবং ইন্টারনেটে অসংখ্য ডক্যুমেন্টারি রয়েছে চাইলে জেনে নিতে পারেন।
নাতাশা ডেমকিনা- এক্স রে দৃষ্টি সম্পন্ন বিস্ময়কর তরুণী: রাশিয়ার এই বিস্ময়কর তরুণী ১০ বছর বয়সে দাবি করে, সে মানুষের শরীরের ভেতরের হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ এবং চামড়ার নিচে কি আছে সব খালী চোখে দেখতে পারে! ডিসকভারি চ্যানেল একটি প্রতিবেদনে বিষয়টি প্রমাণ করেছিল যে, নাতাশা বাস্তবেই মানুষের শরীরের ভেতরের সব কিছুই দেখতে পান। হাড়ের কোথায় ফ্র্যাকচার আছে, কিংবা কোথাও কোন ধাতু আটকে আছে সেটা স্পষ্ট করেই দেখে বলে দিতে পারে নাতাশা! বর্তমানে সে একটি মেডিক্যালে কাজ করছে!
মাইকেল লোতিত- লৌহ মানব: মাইকেল লোতিত পৃথিবীর যে কোন জিনিস খেয়ে হজম করতে পারেন। আপনি যেকোনো কিছু তাকে খাবার হিসেবে দিতে পারেন। তিনি লোহা খেয়ে তা হজম করতে পারেন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে ১৮টি বাইসাইকেল, ১৫টি শপিং কার্ট, ৭টি টেলিভিশন, ২টি বিছানা, ৬টি ঝাড়বাতি, ১টি কফিন এবং ৪০০ মিটার ইস্পাতের চেইন খেয়েছেন। তিনি প্রথমে পানি পান করেন এবং পরে এসব অখাদ্য বস্তু খাওয়া শুরু করেন।
স্টিফেন উইল্টশায়ার- সেরা ফোটোগ্রাফিক মেমরি: স্টিফেন উইল্টশায়ার ১৯৭৪ সালে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শূন্য থেকে ভূদৃশ্য একবার দেখেই হুবহু অঙ্কন করতে পারেন! তিনি জন্মগতভাবেই বোবা এবং প্রতিবন্ধী। ৫ বছর বয়সে তার অঙ্কনের সুপ্ত প্রতিভা বাবা মার নজরে আসে! যখন তার বয়স ৯ সে তখন প্রথম পেপার নামক শব্দটি উচ্চারণ করে যখন তার শিক্ষক তার কাছ থেকে অংকনের জিনিসগুলো নিয়ে যাচ্ছিলেন! শুধুমাত্র সংক্ষিপ্ত একটি হেলিকপ্টারের ভ্রমণ শেষেই তিনি পুরো শহরের ছবি হুবহু এঁকে ফেলতে পারেন!
লাই থো লিন- চুম্বকীয় মানব: লাই থো লিন নামের ৭৮ বছর বয়সী এই মানুষের শরীরে যে কোন ধরণের লৌহ আকৃষ্ট হয়। বিজ্ঞানীরা তাকে নিয়ে গবেষণা করে বিভ্রান্ত। তারা বুঝতে পারছেন না, তার শরীরের এই ম্যাগনেটিক শক্তি কোথা থেকে এসেছে।
যাও রুই- ড্রিল মানব: চায়নার পশ্চিম ও দক্ষিণের মিয়াঞ্জু শহরে যাও রুই নামের একজন ২৪ বছর বয়সী ব্যক্তি চলন্ত ড্রিল মেশিন তার মাথায় কয়েক সেকেন্ড পর্যন্ত লাগিয়ে রাখতে পারে। এতে তার মাথায় কোন ক্ষত হয় না। শুধুমাত্র একটি গাড় লাল চিহ্ন দেখা যায়।
স্টিগ সেভারিনসেন- মানব ডলফিন: স্টিগ সেভারিনসেন দীর্ঘ সময় ধরে শ্বাস আটকে রাখার জন্য বিখ্যাত! তিনি পানির নিচে ২২ মিনিট পর্যন্ত নিজের শ্বাস আটকে রাখতে পারেন! চরম ঠান্ডা বরফের পানির নিচে তিনি শুধু অন্তর্বাস আর ডাইভিং গ্লাস দিয়ে ২৩৬ ফুট পথ একটানা পাড়ি দিয়েছিলেন!
ঈসাও মাচসি– সত্যিকারের সামুরাই: ঈসাও মাচসি কোন সাধারণ সামুরাই নন, নিনজাদের মূভি নিশ্চয়ই দেখেছেন! তিনি সত্যিকারের নিনজা! তার দিকে আপনি যাই ছুড়ে মারেন না কেন, তিনি তলোয়ার দিয়ে সব কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবেন! তিনি বন্দুকের ছোড়া গুলিকে ও দ্বিখণ্ডিত করতে পারেন! এতে চোখ আর সেন্স ছাড়া কিছুই ব্যবহার করেন না!
ড্যানিয়েল ব্রাউনিং স্মিথ- রাবার বালক: বিস্ময়কর এই মানুষটি রাবার বালক হিসেবেই পরিচিত। তিনি নিজের শরীরকে এত বেশি নমনীয় করতে পারেন যে তিনি নিজেকে ছোট্ট বাক্সে ও ঢুকিয়ে ফেলতে পারেন!